রমজান মাসকে সামনে রেখে নিত্যপণ্যের বাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কিছু পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকলেও ভোজ্যতেলসহ কয়েকটি পণ্যের সংকট ও মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে।
ভোজ্যতেলের সংকট ও দাম বাড়ার অভিযোগ:
দীর্ঘদিন ধরে ভোজ্যতেলের বাজারে অস্থিরতা চলছে। শুল্ক ছাড়ের পরও আমদানিকারকরা তেলের সরবরাহ কমিয়ে রেখেছে বলে অভিযোগ করছেন ক্রেতারা। সরকারের নির্ধারিত দাম প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৫৭ টাকা হলেও খুচরা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৮২ টাকায়। বোতলজাত তেলের সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাজারে চাহিদা থাকা সত্ত্বেও ভোক্তারা সহজে এটি কিনতে পারছেন না।
মাংস ও মুরগির বাজার পরিস্থিতি:
গরুর মাংসের দাম তুলনামূলক স্থিতিশীল থাকলেও ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২১০ টাকায় পৌঁছেছে। মধ্যবিত্তদের ক্রয়ক্ষমতার ওপর এর প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।
ইফতার সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি :
ইফতার সামগ্রী হিসেবে ব্যবহৃত ছোলা, বেগুন, লেবু, শসা, ও বিদেশি ফলের দাম বেড়েছে। লেবুর বাজার চড়া হয়ে গেছে, যেখানে এক হালি লেবুর দাম ৪০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। মাল্টা, কমলা ও আপেলের দামও কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে।
চিনিসহ কিছু পণ্যে স্বস্তি :
চিনি, আলু, পেঁয়াজ ও সবজির বাজারে কিছুটা স্বস্তি রয়েছে। চিনির দাম গত বছরের তুলনায় কমে প্রতি কেজি ১২০-১২৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। সবজির মধ্যে টমেটো, কাঁচামরিচ, আলু ও পেঁয়াজের দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই রয়েছে।
খেজুরের বাজারে ব্যতিক্রম :
এবারের রমজানে খেজুরের দাম কমেছে। বিভিন্ন জাতের খেজুরের দাম ২০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত কমে গেছে, যা ভোক্তাদের জন্য স্বস্তির খবর।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বাজার স্থিতিশীল রাখতে তদারকি জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছে। তবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক দাবি করেছেন, বাজারে কোনো পণ্যের সংকট নেই, যা ভোক্তাদের অভিজ্ঞতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
রমজানের আগে কিছু পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকলেও ভোজ্যতেলের সংকট এবং ইফতার সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ ক্রেতাদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের কার্যক্রম কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হলে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি প্রতিরোধ করা সম্ভব হতে পারে।