রাজবাড়ীতে সবজির বাজার অস্থির হয়ে পড়েছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় পাইকারি থেকে খুচরা- সব জায়গায় দাম বেড়েছে। ক্রেতারা দীর্ঘশ্বাস ফেলছেন। আগে ২০০ টাকায় তিন থেকে চার ধরনের সবজি পাওয়া যেত। এখন সেই টাকায় দুই ধরনের সবজিও কেনা যায় না। বিক্রেতারাও বিপাকে। সরবরাহ না বাড়া পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা নেই।বাজার ঘুরে জানা গেছে, খুচরা পর্যায়ে বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। খুচরা বিক্রেতাদের কিনতে হয়েছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। একইভাবে উচ্ছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা, পটোল ৬০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৬০ টাকা, ঝিঙে ৬০ টাকা, কচুরলতি ৬০ টাকা এবং লাউ প্রতিটি ৬০-৭০ টাকায়।নতুন মৌসুমি শীতের সবজিও এসেছে বাজারে। তবে সেগুলোর দাম আকাশছোঁয়া। ফুলকপি প্রতি কেজি ১৫০-১৬০ টাকা। বাধাকপি ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষ কিনতে দ্বিধায় পড়ছেন।
তুলনামূলকভাবে সস্তা সবজির মধ্যে গোলআলু, পেঁপে ও কচুরমুখী রয়েছে। এসবের দাম কেজিপ্রতি ২৫-৩৫ টাকা। নিম্নআয়ের মানুষ তাই এ তিনটি সবজির ওপর ভরসা করে বাজার করছেন।বিক্রেতারা বলছেন, বর্ষার কারণে গরমকালে সবজির উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। এদিকে শীতকালীন সবজি এখনো পর্যাপ্তভাবে বাজারে আসেনি। সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়ে গেছে। শহরের প্রধান বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে সরবরাহ বাড়লে দামও স্বাভাবিক হবে।’
রাজবাড়ীর খুচরা সবজি ব্যবসায়ী কোরবান শেখ বলেন, ‘আমরাও সবজি কিনছি অনেক হিসাব করে। কারণ, বেশি দামের কারণে ক্রেতারা খুব কম কিনছে। ছোট একটা লাউ আমাদের কিনতে হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। দোকানে নিয়ে এলে ক্রেতারা দাম শুনে চলে যায়। প্রতি বছরই এই সময় বাজারে সবজির সংকট দেখা দেয়।’
সবজির দাম বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। শহরের গৃহিণী সাহানা ইয়াসমিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রতিদিনের বাজার করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছি। আগে ২০০ টাকায় তিন-চার ধরনের সবজি নেওয়া যেত। এখন ওই টাকায় দুই কেজিও হয় না।’
বিক্রেতাদের অভিযোগ, দাম বাড়ায় ক্রেতারা কম কিনছেন। এতে তাদের বিক্রিও কমে গেছে। ফলে তারাও ভালো নেই।রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ডা. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এ সময়টা কিছুটা ভিন্ন। গ্রীষ্মকালীন সবজির মৌসুম এখন শেষের দিকে। অনেক কৃষক গ্রীষ্মকালীন আবাদ শেষ করে শীতকালীন ফসলের প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছেন। এতে অনেক জমি আপাতত খালি পড়ে আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘শীতের সবজি এখনো পর্যাপ্ত পরিমাণে বাজারে আসেনি। এ কারণেই সবজির কিছুটা সংকট তৈরি হয়েছে। আর সংকট থাকলে দাম বাড়বেই। এই অবস্থা আরও ২০ থেকে ২৫ দিন চলবে বলে মনে করছি। আগামী ১৫ অক্টোবরের পর থেকে বাজারে পর্যাপ্ত সবজি আসতে শুরু করবে। তখন এ সমস্যা থাকবে না।’