X

রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ নেতার গ্রেপ্তার প্রচেষ্টায় বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ

রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করানোর চেষ্টাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় শুরু হওয়া এই সংঘর্ষ রাত ১১টা পর্যন্ত চলে। সংঘর্ষ চলাকালে কয়েকটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটে এবং তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়।সংঘর্ষে পুলিশের নগর বিশেষ শাখার (সিটিএসবি) এক সদস্যসহ চারজন আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন, মহানগর মহিলা দলের ক্রিড়া সম্পাদক লাভলী খাতুন, তার আড়াই বছর বয়সী কন্যা লামিয়া, সিটিএসবি সদস্য তোফাজ্জল হোসেন ও রেলওয়ের কর্মচারী মো. রনি। আহতদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এছাড়া সংঘর্ষের সময় তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়, যার মধ্যে একটি ছিল সাংবাদিক জাহিদ হাসান সাব্বিরের। তিনি ঘটনাস্থলে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে তার মোটরসাইকেল সড়কের পাশে রাখা অবস্থায় অগ্নিসংযোগ করা হয়। তবে অপর ‍দুইটি মোটরসাইকেলের মালিকের নাম তাৎক্ষনিকভাবে জানা যায়নি।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে মহিলা দলের নেত্রী লাভলী ও তার অনুসারীরা কাদিরগঞ্জ এলাকার একটি বহুতল ভবন ঘেরাও করেন। ওই ভবনের একটি ফ্ল্যাটে পরিবারসহ বসবাস করেন বোয়ালিয়া (পশ্চিম) থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ বাবু।

লাভলী দাবি করেন, তিনি মোস্তাক আহমেদকে ভবনে ঢুকতে দেখেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালালেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে সিসিটিভি ফুটেজ ও নিরাপত্তা প্রহরীর খাতায় মোস্তাকের নাম থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। অভিযান শেষে তার ভাই সাব্বির বাবুকে গ্রেপ্তার করা হলেও মোস্তাক পলাতক রয়েছেন।মোস্তাক আহমেদকে না পাওয়ায় মহিলা দল নেত্রী লাভলী সাবেক যুবদল নেতা মারুফ হোসেন জীবনকে দায়ী করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মারুফের অনুসারীরা দড়িখড়বোনা এলাকায় লাভলীর বাড়িতে হামলা চালায় এবং ভাঙচুর করে। এরপর প্রতিশোধ হিসেবে লাভলীর অনুসারীরা মারুফের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে হামলা করে ভাঙচুর চালায়।

সংঘর্ষটি দড়িখড়বোনা, উপশহর মোড়, রেলগেট, সপুরা ও শালবাগান এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র ও হাতবোমার ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। তবে সংঘর্ষের দীর্ঘ সময় পরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যকর উপস্থিতি দেখা যায়নি। তবে রাত ১১টার দিকে সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এর পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে মোটরসাইকেলে দেওয়া আগুন নিভিয়ে দেয়।সংঘর্ষের পর রাতে সাড়ে ১১টার দিকে তাৎক্ষনিক সংবাদ সম্মেলন করেন মহিলা দল নেত্রী লাভলী। তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপিরই একটি গ্রুপ তার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। লাভলী আরও দাবি করেন, আওয়ামী লীগ নেতার ভাই সাব্বিরকে তুলে দেওয়ার আগে তাকে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, যা তিনি ফিরিয়ে দেন। এ কারণে তার বাড়িতে হামলা চালানো হয়।

এ বিষয়ে মারুফ হোসেন জীবনের বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তবে তার পক্ষ থেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, সংঘর্ষের কারণ আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাক নন, বরং লাভলীর পরিবারের সাথে রাজনৈতিক বিরোধ।রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন জানান, সংঘর্ষের ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রাতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বাড়ানো হয় যৌথবাহিনীর টহল। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলে তদন্ত করে দোষিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings