X

রিভার ট্যুরিজমে সম্ভাবনার দ্বার খুলছে হাউজবোট, ঢাকায় প্রথমবারের মতো বিশেষ মেলা

বাংলাদেশের নদীমাতৃক ভূপ্রকৃতি ও জলাভূমির অপরূপ সৌন্দর্য ঘিরে গড়ে উঠেছে নতুন ও সম্ভাবনাময় পর্যটনধারা—রিভার ট্যুরিজম। এর কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে হাউজবোট। বিশেষ করে টাঙ্গুয়ার হাওর, কাপ্তাই হ্রদ এবং পদ্মা-মেঘনা নদীবিধৌত অঞ্চলে হাউজবোট এখন জনপ্রিয় ও শক্তিশালী পর্যটন মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

এই হাউজবোটভিত্তিক ইকো-ট্যুরিজম শুধু বিনোদনের খোরাকই নয়, এটি স্থানীয় অর্থনীতি, কর্মসংস্থান ও পরিবেশবান্ধব ভ্রমণের এক টেকসই মডেল হয়ে উঠেছে। প্রতিবছর শুধু টাঙ্গুয়ার হাওরেই ৩ লক্ষাধিক পর্যটক হাউজবোটে রাত্রিযাপন করে। কাপ্তাই হ্রদে এবং পদ্মা-মেঘনা নদীতেও একই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।

বর্তমানে প্রায় ৩৫০০ জন স্থানীয় মানুষ এই খাতে সরাসরি যুক্ত। প্রতিটি হাউজবোট বছরে গড়ে ৪০-৬০ লাখ টাকার পণ্য ও খাদ্যসামগ্রী স্থানীয় বাজার থেকে সংগ্রহ করে, যার সুফল পাচ্ছে সুনামগঞ্জ, রাঙামাটি, মাওয়া অঞ্চলের বাজার অর্থনীতি।

সম্প্রতি হাউজবোট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (HOAB)-এর নেতৃত্বে, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড (BTB) এবং বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের (BPC) সহযোগিতায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • সব হাউজবোটের বৈধ রেজিস্ট্রেশন ও নীতিমালা মানা বাধ্যতামূলক।
  • সেফটি স্ট্যান্ডার্ড নিশ্চিত ও প্রশিক্ষিত স্টাফ নিয়োগ।
  • পরিবেশবান্ধব ভ্রমণ চালু—ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট, প্লাস্টিক নিষিদ্ধকরণ, সোলার ও বায়ো-টয়লেট ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা।
  • স্থানীয় যুবকদের হসপিটালিটি ও গাইড হিসেবে প্রশিক্ষণ।
  • নতুন হাউজবোট গন্তব্য হিসেবে হাকালুকি, চলনবিল, গোমতী, পদ্মা ও কাপ্তাই অঞ্চলে সেবা সম্প্রসারণ।

তবে এই খাতে প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে পূর্ণাঙ্গ নীতিমালার অভাব, অবৈধ ও অনিরাপদ ট্রলার চলাচল, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার দীর্ঘসূত্রতা।

বিশেষ মেলার আয়োজন

রিভার ট্যুরিজম ও হাউজবোট ইন্ডাস্ট্রির টেকসই বিকাশ ও নিরাপদ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড ও হাউজবোট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন প্রথমবারের মতো আগারগাঁও পর্যটন ভবনে আয়োজন করছে বিশেষ মেলা। মেলায় থাকবে ৫০টিরও বেশি আধুনিক হাউজবোট প্রদর্শনী, রিভার ট্যুরিজমের গুরুত্ব ও সুযোগ নিয়ে সেমিনার, পর্যটন উদ্যোক্তাদের ওয়ার্কশপ ও নেটওয়ার্কিং সেশন।

এ বিষয়ে হাউজবোট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি মো. আরাফাত হোসেন বলেন, “হাউজবোট শুধু একটি পরিবহন নয়; এটি হাওরবাসীর জীবনধারার অংশ। এই মেলার মাধ্যমে হাওরকে আন্তর্জাতিক পর্যটন মানচিত্রে যুক্ত করতে চাই।”

এছাড়াও হাউজবোট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক নাঈমুল হাসান বলেন, “প্রায় ৫০০ কোটি টাকার এই খাত স্থানীয় দুই হাজারেরও বেশি পরিবারের জীবনমান পরিবর্তন করেছে। এবার দরকার সরকারি সঠিক নীতি ও পৃষ্ঠপোষকতা।”

মেলায় অংশগ্রহণ করতে রেজিস্ট্রেশনের জন্য ০১৮৭৪-৩৫৬৫২৭ এই নাম্বারে যোগাযোগ করতে হবে। মেলা সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সকলের জন্য উন্মুক্ত।

Categories: পর্যটন
Md Abu Bakar Siddique:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings