X

রিয়াল মাদ্রিদের জালে বার্সার এক হালি গোল

ম্যাচ শুরুর আগেই বলা হয়েছিল এই এল-ক্লাসিকোর মাহাত্ম্য আলাদা। হ্যান্সি ফ্লিকের অধীনে উড়ন্ত বার্সেলোনা এবারের ক্লাসিকোয় যোগ করেছিল বাড়তি উন্মাদনা। ২০১৮ সালের পর এবারেই রিয়াল-বার্সা দ্বৈরথ ছড়িয়েছিল এতটা আগ্রহ।

আর সেই আগ্রহের কারণ ছিল যারা, তারাই হেসেছে শেষ হাসি। নিখুঁত পরিকল্পনায় হ্যান্সি ফ্লিকের বার্সেলোনা রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়েছে তাদেরই মাঠে। প্রথমার্ধে লম্বা পাস আর হাই লাইন ডিফেন্সে রিয়ালকে করেছে হতবুদ্ধি। আর তার সুযোগ নিয়ে দ্বিতীয়ার্ধে বের করেছে ম্যাচের ফল। একে একে রিয়ালের জালে তারা পুরেছে এক হালি গোল!

সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে প্রথম ২১ মিনিটেই হতে পারতো গোটা পাঁচেক গোল। তিনটি হয়নি স্ট্রাইকারদের কারণে।  বাকিগুলোর জন্য নিজেদের কৃতিত্ব দিতেই পারে বার্সেলোনার রক্ষণভাগ। তাদের নিখুঁত হাই লাইন ডিফেন্সে বারবার আটকেছে রিয়াল মাদ্রিদ।

তবে প্রথম ৪৫ মিনিটে ৭ বার অফসাইড বাদ দিলেও রিয়াল মাদ্রিদের ফরোয়ার্ড লাইনের গোল মিস ছিল চোখে পড়ার মতোই। পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসা বার্সা গোলরক্ষক ইনাকি পেনার বিপক্ষে কিলিয়ান এমবাপে যেমন গোল পাননি। তেমনি সহজ সুযোগ ছেড়েছেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র।

বার্সেলোনা অবশ্য প্রথমার্ধের বিবেচনায় কিছুটা পিছিয়েই থাকবে। তবু ম্যাচের সেরা সুযোগটাও পেয়েছিল তারাই। ওয়ান-অন-ওয়ানে লামিনে ইয়ামাল বল তুলে দিয়েছিলেন রিয়াল গোলরক্ষক আন্দ্রেই লুনিনের হাতে।

চিরায়ত ধারার বাইরে গিয়ে এদিন বার্সেলোনা খেলেছে হাই লাইন ডিফেন্স রক্ষা করে। সেই ডিফেন্স বারবারই ভাঙতে চেয়েছেন এমবাপে। একটা গোলও পেয়েছিলেন। তবে ফ্রেঞ্চ স্ট্রাইকারের উদযাপন থামতে হয় অফসাইডের সঙ্কেতের পর।

দ্বিতীয়ার্ধে শুরুটা ছিল ধীরগতির। লম্বা পাসের স্ট্র্যাটেজি ছেড়ে বার্সেলোনার খেলায় ছিল ছোটো ছোট পাসে এগুবার পরিকল্পনা। সেটাই যেন রিয়ালকে খানিক এলোমেলো করলো। ম্যাচের গতির সঙ্গে রিয়ালের রক্ষণভাগও খানিক ধীর ছিলেন। সেটাকেই কাজে লাগালেন রবার্ট লেভানডফস্কি।

মার্কো কাসাদোর পাস ছিল নিখুঁত। ডিফেন্সচেরা সেই পাসে লেভানডফস্কিকে ঠিকই ট্র‍্যাপে ফেলেছিল রুদিগার-মিলিতাও জুটি। তবে ফার্লান্দ মেন্দি ছিলেন ডিফেন্স লাইনের অনেকটা পিছনে। সেই সুবাদেই লেভানডফস্কি পেয়ে যান গোল করার লাইসেন্স। ঠান্ডা মাথার ফিনিশে বল জড়ান জালে (১-০)।

ম্যাচের ৫৪ মিনিটে এলো প্রথম গোল। সেই গোলের পর নড়েচড়ে বসার সুযোগ পায়নি রিয়ালের রক্ষণ। এবারে একসঙ্গে ভুল করলেন তিনজন। আলেহান্দ্রো বালদের ওভারল্যাপটা বুঝে উঠতে পারেননি লুকাস ভাস্কেজ। এরপরেই বালদের ক্রসে লেভানডফস্কির দুর্দান্ত হেড।

মিলতাও এবং রুদিগারের দুজনেই পোলিশ স্ট্রাইকারকে রেখেছেন আনমার্কড। নিখুত প্লেসমেন্টের সেই হেড আটকাবার উপায় ছিল না রিয়াল গোলরক্ষক লুনিনের (২-০)।

তবে লেভানডফস্কি এরপর মিস করেছেন ম্যাচের সেরা দুই সুযোগ। প্রতি আক্রমণে রাফিনিয়ার পাস ছিল বার্সার নাম্বার নাইনের দিকে। ফাঁকা পোস্টে একবার লেভা বল মেরেছেন বারে। আরেকবার ছিল গোলবারের অনেকটা ওপরে।

রিয়ালের নাম্বার নাইন কিলিয়ান এমবাপের পরিস্থিতি ছিল আরও বিধ্বস্ত। প্রথমার্ধে ছিল তার ৬ অফসাইড। তাতে একটা গোল বাতিলও হয়েছিল। দ্বিতীয়ার্ধেও বার্সা তাকে আটকেছে একই ফাঁদে। এবারেও বাতিল হয়েছে এক গোল।

অবশ্য এমবাপেকে গোলবঞ্চিত করার পেছনে ইনাকি পেনাও রেখেছেন বড় ভূমিকা। বার্সার সেকেন্ড চয়েজ গোলরক্ষক অন্তত আজ ছিলেন দশে দশ পাওয়ার মতোই।

ক্রমাগত গোল মিসের শাস্তিটা রিয়াল পেয়েছে ৭৫ মিনিটে। এল ক্লাসিকোর ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে গোল পেয়েছেন এই স্প্যানিশ ওয়ান্ডারকিড। রাফিনিয়ার পাস ধরে বক্সে অনেকটাই ঢুকে গিয়েছিলেন। কাছের পোস্টে রেখেছেন শট। লুনিনের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকা শট জড়ায় জালে (৩-০)৷

তিন গোলের পর রিয়াল মাদ্রিদের খুব বেশি করার ছিল না ম্যাচে। তবু আক্রমণে কিছুটা শরীরি আগ্রাসনই দেখাতে চেয়েছিলেন ভিনিসিয়ুস-বেলিংহ্যামরা। সেখানেই আরেকদফায় ভুল করে বসে লস ব্লাঙ্কোসরা।

৮৪ মিনিটে লং পাসে বল পাওয়া রাফিনিয়াকে মার্ক করার মতো অবস্থায় ছিলেন না কেউই। লুকাস ভাস্কেজকে পেছনে ফেলতে সমস্যাই হয়নি বার্সা অধিনায়কের। ফিনিশিংটা ছিল দারুণ এক চিপে। বাধাই করে রাখা সেই গোলটায় নিশ্চিত হয় রিয়ালের বড় ব্যবধানের হার।

Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings