X

শর্ষের বালিশে কি আসলেই নবজাতকের মাথা গোল হয়

পরিবারে নতুন সদস্যের আগমনে বয়ে যায় আনন্দের বন্যা, শুরু হয় নানা আয়োজন, তোড়জোড়। নানা রকম উপহার আসে, সঙ্গে পরামর্শও। নানা উপদেশ, সতর্কতা শুনে নতুন মা অনেক সময়ই দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যান। অনেকেই নবজাতকের বালিশ নিয়েও চিন্তায় পড়ে যান। কেননা, সেখানেও থাকে নানা মুনির নানা মত।

নবজাতক জন্মের পর ১৮-২০ ঘণ্টা ঘুমিয়ে থাকে। পর্যাপ্ত ঘুম বাচ্চার মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য জরুরি। বাচ্চার ঘুমের সময়টা যেন নির্বিঘ্নে কাটে, সেদিকে খেয়াল রাখা প্রয়োজন। বাচ্চার জন্মের পর তার মাথার আকৃতি নিয়ে দুশ্চিন্তা থেকে অভিভাবকেরা বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা করে থাকেন, যেগুলোর বেশির ভাগেরই বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
বাচ্চাদের বিছানা–বালিশের ক্ষেত্রে প্রথমেই খেয়াল রাখতে হবে বাচ্চা যেন আরাম পায়, সেদিকটা। তাদের ত্বক অতিসংবেদনশীল হওয়ায় সুতি কাপড়ের বিছানা–বালিশ ব্যবহার করা উচিত।

তবে চিকিৎসকেরা সাধারণত নবজাতকের জন্য বালিশ ব্যবহার করাকে খুব একটা উৎসাহিত করেন না। কারণ, শিশুর জন্মের পর প্রথম মাসগুলোতে তার ঘাড় ও মাথার সঠিক নিয়ন্ত্রণের অভাব থাকে। এ জন্য বাচ্চার নাক বা মুখ যদি বালিশ বা অন্য কোনো কিছুতে আবৃত হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে সে তার মাথা সরিয়ে ফেলতে পারবে না। এতে শিশুদের দমবন্ধ হয়ে বরং বিপদ হতে পারে।  তাঁরা দুই বছরের নিচের শিশুদের ক্ষেত্রে বালিশ ব্যবহারে খুব একটা উৎসাহিত করেন না।

তবে বাচ্চাকে বালিশ দিতে হলে বেশ কিছু বিষয় খেয়াল রাখা উচিত—

• নবাজতকের মাথার আকৃতি ও গঠন বিবেচনা করে মাথার নিচের বালিশটি উপযুক্ত মাপের হওয়া উচিত। পুরোনো নরম–পাতলা সুতির কাপড় পেঁচিয়ে গোল করেও বালিশ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। বালিশের কভারও পাতলা সুতি কাপড়ের হওয়া উচিত।

• বাচ্চার জন্য সুগন্ধি বা পালকযুক্ত বালিশ ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে বাচ্চার অ্যালার্জির সমস্যা হতে পারে।

• বাচ্চা যদি কটে ঘুমায়, তাহলে এমন বালিশ হওয়া উচিত তা যেন কটে আঁটোসাঁটোভাবে এঁটে যায়।

আমাদের দেশে প্রায় সব পরিবারেই বাচ্চাকে শর্ষের বালিশে শোয়ানোর প্রচলন রয়েছে। অনেকেই মনে করেন, শর্ষের বালিশে শোয়ালে বাচ্চার মাথার আকার ঠিকঠাক গোল হয়। নতুন মাকেও তাই চাপ দেওয়া হয় বাচ্চাকে শর্ষের বালিশে শোয়াতে।

চিকিৎসকদের মতে, এই ধারণা ভ্রান্ত। আসলে শর্ষের বালিশে শোয়ানোর সঙ্গে শিশুর মাথার গঠনের কোনো সম্পর্ক নেই। তবে শর্ষের বালিশে শোয়ালে মাথায় তুলনামূলকভাবে কম চাপ পড়ে।

বালিশের ভেতরে সর্ষের বালিশ তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। তবে এর সঙ্গে মাথার আকৃতির কোন সম্পর্ক নেই। সে জন্য প্রাচীনকাল থেকেই পরিবারে বাচ্চাকে এভাবে শোয়ানোর প্রচলন রয়েছে। কিন্তু এই বালিশে শোয়ালেই যে বাচ্চার মাথা গোল হবে, এমনটা সঠিক নয়।

শিশুকে বিছানায় ডানে বা বাঁয়ে কাত করে শুইয়ে দিতে হবে। চিত করে শুইয়ে দেওয়া উচিত নয়। শিশু নিজে নিজেই উপুড় হয়ে যাচ্ছে কি না, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। চিত বা উপুড় অবস্থায় শিশুর দম আটকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এতে সাডেন ইনফ্যান্ট ডেথের মতো মারাত্মক ঘটনাও ঘটতে পারে।

নবজাতক ও শিশুর ভালোর জন্যে কোনো ভ্রান্ত ধারণায় বিশ্বাস না করে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করা উচিত।

Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings