X

শিক্ষক আলতাফ হোসেনের বিদায়: ফুলে সাজানো গাড়িতে চাকরি জীবনের শেষ দিনে বিশেষ সংবর্ধনা

ব্যতিক্রম আয়োজনের মধ্য দিয়ে চাকরি জীবনের শেষ দিনে ফুলে সাজানো গাড়িতে তিন গ্রাম ঘুরিয়ে বিদায় নিয়েছেন শিক্ষক আলতাফ হোসেন। তিনি যশোর সদর উপজেলার বীরনারায়নপুর তের আউলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। আজ কর্মময় জীবন থেকে তিনি বিদায় নিয়েছেন। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গনে প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। প্রধান অতিথি ছিলেন, উপজেলা প্রামিক  শিক্ষা অফিসার মাহাবুবুর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার এসএম শামিম হোসেন। উপস্থিত ছিলেন, নয়ন হোসেন, আরিফুর জামান ছনি, শেখ সাদি, জুয়ের হোসেন, মুরসালিন প্রমুখ। এ সময় স্থানীয় লেবুতলা, বীরনারায়নপুরসহ কয়েক গ্রামের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন। পরে বিদায়ী শিক্ষককে বিভিন্ন উপহার প্রদান করেন স্কুলের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকাবাসীরা।

বীরনারায়নপুর তের আউলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মনিরুজ্জামান বলেন, আমি আলতাফ হোসেন স্যারের ছাত্র ছিলাম। স্যারকে  ছুটি নিতে দেখেনি। অসুস্থ থাকলেও স্যার স্কুলে এসেছেন। স্যার দেয়া শিক্ষা নিয়ে আজ আমরা নানাভাবে প্রতিষ্ঠিত। স্যার আমাদের আদর্শ। একজন আদর্শ শিক্ষক আজ চাকুরি থেকে বিদায় নিলেন। স্যার ভালো থাকুক সব সময়। ফারিয়া মিম বলেন, ক্লাসে পড়াশুনা সুন্দর করে বুঝাতেন। স্কুল পরিস্কার করে রাখতে তিনি। শুধু পড়াশুনা না; বিভিন্ন কারিকুলামে উদ্বুদ্ধ করতো। পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র আলভি হাসান বলেন, স্যার আমাদের সন্তানের মতো দেখেন। কোন কারণে স্কুলে আসতে না পারলে বাড়িতে যেয়ে খোঁজ খবর নিতেন। সাবেক সভাপতি শওকত হোসেন বলেন,  স্কুলের জন্য বিভিন্ন সময় কিনাকাটা করেছি। এক টাকা অতিরিক্ত খরচ করতো না। তিনি সৎ। মানুষ ছিলেন।’
এসময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন বিদায়ী শিক্ষক আলতাফ হোসেন। তিনি বলেন,  ১৯৮৯ সালের আগষ্ট মাসে স্থানীয় কয়কজন মিলে উদ্যোগ নিয়ে স্কুল প্রতিষ্ঠা করি। আমি চেষ্টা করেছি কোন ধরণের বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ছুটি না নিতে। শিক্ষার্থীদের সবসময় পড়াশুনার প্রতি উদ্বৃদ্ধ করেছি। পরিশেষে কর্মময় জীবনে কোন ধরনের ভুলক্রুটি করে থাকলে সবার কাছ ক্ষমা প্রার্থনা করছি। বাঁকী জীবন পরিবার-পরিজন নিয়ে সুষ্ঠু ও সুন্দর ভাবে অতিবাহিত করতে পারি সবার কাছে দোয়া কামনা করছি। আমার চাকরি জীবনের শেষ দিনে সুন্দর অনাড়ম্বরের মধ্য দিয়ে বিদায় হবে যা ছিল কল্পনাতিত। এটা আমার জীবনের অনেক বড় প্রাপ্তি। যা বাঁকি জীবনটুকু মনে রাখার মত। সবার জন্য অনেক দোয়া ও শুভকামনা। শিক্ষক আলতাফ হোসেন উপজেলার বীরনারায়নপুর গ্রামের আজিম উদ্দিন এর ছেলে। তিনি ১৯৮৯ সালের আগষ্ট মাসে চাকরিতে যোগদান করেছিলেন। দাম্পত্য জীবনে স্ত্রী, এক ছেলে ও পাঁচ মেয়ে আছে। তিনি ছিলেন ক্রীড়া সংগঠক ও সামাজিক ব্যক্তিত্ব। কর্মময় জীবনে অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রীকে শিক্ষা দিয়েছেন।  যারা বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ ব্যবসা ও রাজনীতিতে দেশ ও জাতির জন্য অবদান রেখে চলছেন।

Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings