X

শিক্ষক হলেন পাটের উদ্যোক্তা

নূরন নাহার ইতির জন্ম ও বেড়ে উঠা ঢাকায়, বড় হয়েছেন পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ায়। পড়াশোনা করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। একসময় কিশলয় কচি কাঁচার মেলায় শিক্ষকতা করতেন।শিক্ষক ইতি এখন উদ্যোক্তা। সেই গল্প শোনালেন তিনি: সবসময়ই ভাবতাম নিজে কিছু করবো। স্কুলে চাকরিরত অবস্থায় মেয়ের মা হই। তারপর চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে ঘরেই টিউশন ও ছেলে মেয়েদের গান শেখাতে শুরু করি। এর মধ্যে নিজে একটা ছোট্ট বাড়ি করে গেন্ডারিয়া ছেড়ে রায়েরবাগ চলে আসি। আশেপাশে আত্মীয়-স্বজন না থাকায় মেয়েকে দেখার কেউ ছিল না। তাই অনেক ভালো সুযোগ এলেও কোন কাজ করতে পারিনি। মেয়ে বড় হলো, বর্তমানে ইউনিভার্সিটিতে থার্ড ইয়ারে। এখন আর চিন্তা নেই। তাই দুই বছর ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম। একসময় চিন্তা আসে যে আমাদের দেশীয় ঐতিহ্যবাহী পাটজাত পণ্যকে নিয়ে বহুমুখি ডিজাইনের কিছু করা যায় কিনা। তখন থেকে আমি পাটজাত পণ্যের নতুন নতুন ডিজাইন শুরু করি। এভাবে শুরু হয় আমার ব্যবসার যাত্রা।

তার পণ্যের মধ্যে আছে ফ্লোর ম্যাট, বিভিন্ন আইটেমের ব্যাগ, পেন স্ট্যান্ড, ফুলের টব, বটল ব্যাগ, ঝুড়ি, শিকা, টেবিল ম্যাট, টিস্যু বক্স, অর্নামেন্টস বক্স। এখন নিজের কারখানায় মেশিন ও হাতে তৈরি পণ্য উৎপাদন হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জে কারখানায় কাজ করেন ১৫ জন সহযোদ্ধা। মাসে ৩০/৩৫ হাজার পিস উৎপাদন হয়, বিক্রি গড়ে ১২ লাখ টাকার মতো।নূরন নাহার ইতির ফেসবুক পেইজের নাম ভার্টেক্স ক্রাফ্ট।তিনি বলেন, ‘বিলীন হয়ে যাওয়া সোনালী আঁশ ও দেশের ঐতিহ্য রক্ষা করার লক্ষ্যে আমার পরিবেশ বান্ধব এই উদ্যোগ। পাটশিল্প থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব। বাংলাদেশকে প্রোমোট করাই আমার মূল লক্ষ্য।’

তিনি বলেন: আমার কাছে মনে হয়ছিল এমন কিছু পণ্য নিয়ে কাজ করবো যেটা পরিবেশের ক্ষতি করবে না, পাশাপাশি ভ্যালু অ্যাড করা যাবে, কর্মসংস্থানও হবে। গ্রামীণ নারীদের সহায়তা করতে পারবো। সেক্ষেত্রে পাট হলো সবচেয়ে উত্তম। শুরু যখন করেছি, একদিন আমার এই উদ্যোগ অনেক দূর ছড়িয়ে দেওয়ার স্বপ্ন দেখি।

‘দেশের বাইরে রপ্তানির পরিকল্পনা আছে। যেহেতু পাটজাত পণ্য শতভাগ পরিবেশবান্ধব, দেশে-বিদেশে এসব পণ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। তাই আমার মনে হয় একসময় পাটপণ্য নিয়ে খ্যাতি লাভ করাও সম্ভব। একটি কারখানা গড়ে তুলেছি। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে অনেকগুলো কারখানা গড়ে তোলার চেষ্টা করবো যাতে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হয়,” বলে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানান ইতি।

তরুণদের জন্য তার পরামর্শ: চাকরির বাজার খুব খারাপ, সহজে চাকরি পাওয়া যায় না। তাই অপেক্ষা করে সময় নষ্ট না করে, যার যতটুকু আছে তা নিয়ে উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করাই হোক তরুণ সমাজের লক্ষ্য।

Md Abu Bakar Siddique:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings