X

সংস্কার টেকসই করতে হলে জনগণের সমর্থন প্রয়োজন: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন,আজ আমরা সংস্কারের কথা বলছি। অথচ বিএনপি ২ বছর আগে বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। একজন শুরু করবে বাকিরা চলমান রেখে সামনের দিকে এগিয়ে নেব। অনেক ব্যক্তি বা সংগঠন সংস্কারের কথা বলছে। অন্তবর্তি সরকার ও সংস্কারের কথা বলছে। দেশের মানুষের চাহিদার সাথে সামজস্য রেখে পর্যায়ক্রমে সংস্কার পরিবর্তিত হবে। নির্বাচন যত দেরি হবে ততই ষড়যন্ত্র হবে। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনই পারে দেশে রাজনৈতিক স্তিতিশীলতা। সংস্কার টেকসই করতে হলে জনগণের সমর্থন প্রয়োজন। আর সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যমেই তা সম্ভব। চুয়াডাঙ্গায় জেলা বিএনপির সন্মেলন উপলক্ষে শনিবার টাউন ফুটবল মাঠে প্রধান অতিথির (ভার্চুয়াল) বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এমন মন্তব্য করেন।

তিনি আরোও বলেন,বিএনপির কাঁধে এখন অনেক দায়িত্ব। এদেশের মানুষের অনেক প্রত্যাশা, আকাঙ্ক্ষা বিএনপিকে নিয়ে। সুতরাং দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী নেতা-কর্মীদের আচরণ করতে হবে, তৈরি হতে হবে।

 

দীর্ঘ ১৪ বছর পর বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনা এবং আনন্দ মুখর পরিবেশে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফ্যসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সন্মেলন অনুষ্ঠিত হওযায় নেতা কর্মিদের মধ্যে বাড়তি উৎসব বিরাজ করছে। সন্মেলন স্থান জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। সকাল থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সন্মেলন স্থলে এসে কানায় কানায় ভরে তোলে। এসময় বিভিন্ন স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে তোলে পুরো এলাকা।

 

শনিবার বেলা সাড়ে ১০টার স্থানীয় টাউন ফুটবল মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় তিনি বলেছেন, এদেশে ফ্যাসিবাদের জনক শেখ মুজিবুর রহমান। তার হাত ধরেই অর্থাৎ তার নেতৃত্বেই এদেশে হত্যা, লুণ্ঠন, এবং অপরাজনীতি শুরু হয়। যুদ্ধ বিধ্বস্ত নতুন বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বদলে গণতন্ত্র হত্যা করে সকল দলকে নিষিদ্ধ করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা হয়। স্বাধীন বাংলাদেশে একটি রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতির সৃষ্টি করে মানুষের কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়ে দেশকে একটি বদ্ধ কারাগারে পরিণত করা হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ মুজিবের উত্তরসূরী ফ্যাসিবাদের চূড়ান্ত বাস্তবায়নকারী শেখ হাসিনা গত ১৭ বছর এদেশের জনগণের ঘাড়ে অবৈধভাবে চেপে বসে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে অবরুদ্ধ করে অসংখ্য খুন, গুম, ব্যাংক লুট এবং অনিয়ম দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছিল। হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে বাংলাদেশকে দেউলিয়া এবং চরম দারিদ্র্যের শেষ সীমায় পৌঁছে দিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, পুলিশকে যেভাবে আওয়ামী লীগ ব্যবহার করেছে এটা একটা গণতান্ত্রিক দেশে হতে পারে না। সন্ত্রাস আর দুর্ণীতি ছাড়া আওয়ামী লীগের কিছু নেই।গণতন্ত্রের প্রশ্নে বিএনপি কখনো আপোষ করবে না।

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, দেশকে দেশি ও বিদেশি চক্রান্তের মোকাবেলা করে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে। আর এটা করতে হলে অবিলম্বে দেশে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দরকার।

এর আগে সম্মেলনের উদ্বোধক বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পবিত্র কোরআন ও গীতা পাঠ করা হয়। এরপরে সম্মেলনের উদ্বোধক সহ আমন্ত্রিত অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়। বিগত দিনে জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা কর্মীদের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন জেলা বিএনপি নেতা ওয়াহেদুজ্জামান বুলা।

সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সহ-সভাপতি শামসুজ্জামান দুদু, এড.নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, খুলনা বিভাগীয় সহ সভাপতি বাবু জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সাংসদ সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী, মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সাংসদ মাসুদ অরুন, ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল মজিদ, সাংগঠনিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনা, বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শরীফুজ্জামান, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহজাহান খান, সাধারণ সম্পাদক মোমিন মালিথা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবু তালহা, জেলা জাসাসের সভাপতি সেলিমুল হাবিব, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রশিদ ঝন্টু, জেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক তবারক হোসেন, জেলা মৎস্যজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবলু, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী রউফুন নাহার রিনা, জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি এম জেনারেল ইসলাম, জেলা বিএনপি নেতা সিরাজুল ইসলাম মনি, দর্শনা থানা বিএনপির সভাপতি খাজা আবুল হাসনাত, জীবননগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন খাঁন খোকন, সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান কবির, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান পিন্টু, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রোকন, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান লিপ্টন, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মিলিমা ইসলাম বিশ্বাস মিলি, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মির্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলু প্রমুখ। সম্মেলনের একপর্যায়ে জেলার বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা যারা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারের হাতে তারেক রহমানের পক্ষে উপহার সামগ্রী তুলে দেয়া হয়।

সম্মেলনে একমাত্র প্রার্থী হিসাবে আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু ইতিমধ্যেই চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে একাধিক প্রার্থী থাকায় আজকের সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে ৮০৮ জন কাউন্সিলর তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings