X

সাড়ে চার দশক পেরিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ৪৫ বছর পূর্ণ করে ৪৬ বছরে পা দিয়েছে। ইসলামী শিক্ষার সঙ্গে আধুনিক শিক্ষার সমন্বয়ে উচ্চশিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে ১৯৭৯ সালের ২২ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলার শান্তিডাঙ্গার দুলালপুরে যাত্রা শুরু করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উচ্চশিক্ষার সর্বোচ্চ এই বিদ্যাপীঠ।

দীর্ঘ এ পথচলায় প্রতিষ্ঠানটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রয়েছে নানাবিধ অবদান। তবে প্রত্যাশা-প্রাপ্তির সমীকরণে অপ্রাপ্তির তালিকাই দীর্ঘ। তবে সংকট সমাধান করে বিশ্ববিদ্যালয়কে তার মূল লক্ষ্যে পৌঁছতে নিরন্তর কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ।

তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ৮টি অনুষদের অধীন ৩৬টি বিভাগে ১৭ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। এই শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য রয়েছেন ৪০৬ শিক্ষক। এছাড়া ৪৮৮ কর্মকর্তা ও ২৫১ জন কর্মচারী কাজ করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টি এ পর্যন্ত ৬২৪ জনকে পিএইচডি এবং ৭৮৮ জনকে এমফিল ডিগ্রি প্রদান করেছে। বর্তমানে ১৬৪ জন পিএইচডি এবং ৪৭ জন এমফিল গবেষণায় নিয়োজিত রয়েছেন। শিক্ষা ও গবেষণাক্ষেত্রে সহযোগিতা বিনিময়ের লক্ষ্যে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪টি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া ক্রীড়াঙ্গনে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির ঈর্ষণীয় সাফল্য।

এদিকে প্রতিষ্ঠার ৪৬ বছর পেরোলেও সংকট পিছু ছাড়েনি প্রতিষ্ঠানটির। অনুষদ, বিভাগ ও শিক্ষক-শিক্ষার্থী সংখ্যা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত মানের শিক্ষা ও গবেষণা নিশ্চিত করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়টি। নিশ্চিত হয়নি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সিকিভাগ আবাসন ব্যবস্থাও। যার ফলে প্রতিবছর মোট বাজেটের একটি বড় অংশ ব্যয় করতে হয় পরিবহণ খাতে।

চার দশকেও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে যুক্ত হয়নি ছাত্র সংসদ। বিশ্ববিদ্যালয়ে এ পর্যন্ত ১৩ জন উপাচার্য গত হলেও তাদের বেশিরভাগই মেয়াদ শেষ করতে পারেননি। অধিকাংশই অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে আন্দোলনের মুখে অপসারিত হয়েছেন বা পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। এছাড়া শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যের কারণে বারবার গণমাধ্যমে নেতিবাচক শিরোনাম হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার অন্যতম অংশ গবেষণায়ও উল্লেখযোগ্য কোনো অবদান নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছাড়াই নতুন বিভাগ খোলায়ও নতুন বিভাগগুলোতে তৈরি হয়েছে শ্রেণিকক্ষ, ল্যাব ও সেমিনার লাইব্রেরি সংকট।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ইসলামী শিক্ষা ও আধুনিক শিক্ষার সমন্বয় সাধনের যে উদ্দেশ্য নিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়েছিল পরবর্তীতে তা বিভিন্ন কারণে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়কে তার প্রতিষ্ঠাকালীন উদ্দেশ্যে ফিরিয়ে নিতে কাজ করব। একইসঙ্গে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, গবেষণা ও সকল সেবার মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিতে আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করব।

প্রসঙ্গত, ৪৬তম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে শুক্রবার বাদ জুমা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ এবং হল মসজিদসহ অন্যান্য মসজিদসমূহে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া ২২ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের আয়োজন পিছিয়ে ২৫ নভেম্বর সোমবার বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে কর্তৃপক্ষ।

Categories: শিক্ষা
Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings