কুষ্টিয়ায় ৬বছর আগে অবরুদ্ধ করে হামলা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কুষ্টিয়া-৩ সদর আসনের সংসদ সদস্যা মাহবুবুল আলম হানিফসহ সাবেক দুই সংসদ সদস্য, তৎকালীন পুলিশের মহাপরিদর্শক জাবেদ পাটোয়ারী, কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার মেহেদী হাসান ও কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি নাসির উদ্দিনসহ ৪৭ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২০/৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন আমার দেশ পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। বৃহষ্পতিবার দুপুর ১টার সময় তিনি নিজে কুষ্টিয়া মডেল থানায় হাজির হয়ে ওসি মাহফুজুল হক চৌধুরীর কাছে এজাহার জমা দেন। এসময় সেখানে জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদাল হোসেন, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আব্দুল্লাহ সহ কুষ্টিয়ার সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া মডেল/সদর থানার ওসি জানান,‘মামলার বাদি মাহমুদুর রহমান ২০১৮ সালের ২২ জুলাই একটি মানহানি মামলার বিবাদী হিসেবে কুষ্টিয়ায় আদালতে হাজিরা দিতে আসলে এজাহার নামীয়দের নির্দেশে/হুমুকে বাদিকে দিনভর অবরুদ্ধ করে রেখে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে আদালত চত্বরেই তার উপর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা করে মারধর, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রক্তাক্ত জখম করে গুরুতর আহত করে। এঘটনায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে দেয়া এজাহারটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। মামলাটির তদন্তভার দেয়া হয়েছে কুষ্টিয়া মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু তাহেরকে। তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলাটির তদন্তসহ সকল আইনগত পদক্ষেপ গ্রহন করবেন এবং আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান শুরু করবেন ।
মাহমুদুর রহমান দুপুরে থানায় এজাহার জমা দিয়ে বেড়িয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন এবং তার উপর নৃসংশ হামলার চিত্র তুলে ধরেন। পরে তিনি কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময়কালে মামলাটি যাতে সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় এনে বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা যায় সেবিষয়ে জেলার গণমাধ্যম কর্মীদের সর্বাত্মক সহযোগিতার আশা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন,‘শেখ হাসিনার নির্দেশে তার গুন্ডা বাহিনী কোর্ট প্রঙ্গনে আমার উপরে যে প্রাণঘাতি হামলা করেছিলো তার বিরুদ্ধে আজকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশে বিচার চেয়ে এজাহার দায়ের করার জন্য আমি আজ কুষ্টিয়াতে এসেছি। এই যে মামলাটা আমি করছি, এটা মনে করার কোন কারন নেই যে, আামি রিভেন্স নেয়ার জন্যি হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা করছি। একই সাথে এই ঘটনার সাথে সেদিন আরও যারা হামলায় জড়িত, যারা নির্দেশদাতা ছিলো তদানিন্তন হোম মিনিষ্টার, আসাদুজ্জামান কামাল, মাহবুবুল আলম হানিফ, সাবেক মন্ত্রী এবং জাসদ নেতা হাসানুল হক ইনু, আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী। তখনকার এসপি মেহেদী হাসান এর নির্দেশে থানার ইনচার্জ (ওসি) নাসির উদ্দিন এবং ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতৃত্বে যেসব ক্যাডার বাহিনী আমার উপর প্রকাশ্যে দিবালোকে নগ্ন হামলা চালায় আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে। এই হামলার ভিডিও ফুটেজ সারা পৃথিবীর মানুষ দেখেছে। এই ঘটনার বিরুদ্ধে আমি আজকে মামলা করলাম, বিষয়টা এমন নয় যে আমি প্রতিশোধ নেয়ার জন্য মামলা করছি। এই মামলা করার একটা বৃহত্তর উদ্দেশ্য আছে। সেটি হলো- ‘বাংলাদেশে যেনো আর কোনদিন শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের মতো আরেকটি ফ্যাসিবাদ ফিরে না আসে। তার জন্য উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। যাতে বাংলাদেশে মানুষের অধিকার গণমানুষের অধিকার, বাক স্বাধীনতা, আদালতের মর্যাদা রক্ষা পায়। আমি চাই বর্তমান সরকার যেনো অনতিবিলম্বে এই মামলার তদন্ত শুরু করে এবং ইন্টারপোলের মাধ্যমে পলাতক ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনা কে এবং যারা যারা পলাতক আছে তাদের গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করায় এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করে। এই মামলার মাধ্যমে প্রমান করতে চাই যেনো রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসে কেউ কোন দিন ফ্যাসিবাদি আচরন করে রক্ষা না পায় ।