ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রদল নেতা এসএম শাহরিয়ার আলম সাম্যকে সুইচ গিয়ার দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়। দুই গ্রুপের পরিকল্পনায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। হত্যার পর আসামিরা পালিয়ে কক্সবাজারে চলে যায়।
সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিনহাজুর রহমানের আদালতে আসামি মো. রিপন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব তথ্য জানায়।
রিপন জবানবন্দিতে বলে, সাম্যকে হত্যার পর মূল আসামিকে সে মোটরসাইকেলে করে ঘটনাস্থল থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মন্দিরের গেটে নিয়ে যায়। সেখান থেকে আরেকটিকে গ্রুপ তাকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়। এরপর তারা সবাই কক্সবাজারে পালিয়ে যায়। সে বলে, হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছে দুটি গ্রুপ। ৫ থেকে ৭ জন সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়। এর মধ্যে দুজন সাম্যকে আঘাত করে। বাকিরা আশপাশে নজর রাখে। হত্যাকারীরা সবাই মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতার হওয়া পাঁচ আসামিকে সোমবার আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় রিপন দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিতে সম্মত হন। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মো. আখতার মোর্শেদ তার জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন।
এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুল ইসলাম রিপনের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এছাড়া আসামি সোহাগ, হৃদয় ইসলাম ও রবিনকে সাত দিনের রিমান্ড ও আসামি সুজন সরকারকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামানের আদালত সুজনকে কারাগারে এবং অন্য তিন আসামির দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে রোববার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে।
এছাড়া ১৪ মে সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানা এলাকা থেকে এ মামলায় মো. তামিম হাওলাদার, পলাশ সরদার ও সম্রাট মল্লিককে গ্রেফতার করা হয়। ওইদিন বিকালে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ১৭ মে প্রথম দফায় তাদের ছয় দিনের ও ২৪ মে দ্বিতীয় দফায় আরও পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। বর্তমানে তারা রিমান্ডে রয়েছে।
গত ১৩ মে রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সাম্যকে ছুরিকাঘাত করে একদল দুর্বৃত্ত। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় সহপাঠীরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক সাম্যকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ১৪ মে সাম্যের বড় ভাই শরীফুল ইসলাম শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।