ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইআর)-এর শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার দোষীদের বিচার দাবিতে শাহবাগ থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন একই ইনস্টিটিউটের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
আজ শুক্রবার সকাল ১১ টার দিকে বিক্ষোভকারীরা শুরুতে আইইআর ভবনের সামনে জড়ো হন। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। সমাবেশ শেষে দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে এসে শিক্ষার্থীরা শাহবাগ থানার সামনে অবস্থান নেন।
এসময় শাহবাগ থানার সামনে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয় এবং সাজোয়া যান প্রস্তুত রাখা হয়। তবে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
শিক্ষার্থীরা থানা ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে সাম্য হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চেয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন। এসময় বিক্ষোভকারীরা ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘খুনি কেন বাইরে, প্রশাসন কি করে’, ‘আমার ভাই মরলো কেন, শাহবাগ থানা জবাব চাই’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
আইইআর-এর ২৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইব্রাহিম মুন্সী বলেন, এটি একটি নির্দলীয় কর্মসূচি। সাম্য ভাইয়ের মৃত্যুর পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এটিকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। তাদের মূল দাবি বিভিন্নজনের পদত্যাগ। কিন্তু আমাদের প্রধান এবং একমাত্র দাবি সাম্য হত্যার সঙ্গে জড়িত প্রধান আসামিসহ সকলের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার।’
হত্যার ৭২ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করা হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৪৮ ঘন্টার মধ্যে বাকি জড়িতদের গ্রেফতার করা না হলে তারা কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন।
একই ইন্সটিউটের শিক্ষার্থী রাতুল আহমেদ শ্রাবন বলেন, সাম্য ভাই হত্যার প্রধান আসামিকে এখনো গ্রেফতার করা হয়নি এবং গ্রেফতারের কোনো প্রচেষ্টা দেখা যাচ্ছে না। পুলিশ যাদের গ্রেফতার করেছে, তারা জড়িত থাকলেও তারা প্রধান আসামি নয়। কেন প্রধান আসামিকে ধরা হচ্ছে না, তার জবাব পুলিশকে দিতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে এখন পর্যন্ত আশ্বাস পেয়েছেন কী না প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন তাদের জায়গা যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমরা ভিসি স্যারের উপর আস্থা রাখছি, সাম্য ভাই হত্যার দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করতে কাজ করবেন।
শিক্ষার্থীদের অবস্থানের বেশ কিছুক্ষণ পর শাহবাগ থানার পক্ষ থেকে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়। এ সময় আইইআর-এর তিনজন শিক্ষক অধ্যাপক আব্দুস সালাম, অধ্যাপক সিরাজ, ওয়াসি চারজন শিক্ষার্থীর সমন্বয়ে গঠিত একটি প্রতিনিধি দল তাদের দাবি নিয়ে আলোচনা করতে থানার ভেতরে প্রবেশ করেন।
উল্লেখ্য, গত ১৪ই মে ২০২৫ রাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ এবং মামলা দায়ের করা হয়েছে। সাম্য হত্যার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় উত্তাল রয়েছে এবং শিক্ষার্থীরা নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছেন।