X

সিন্ডিকেটে বাড়ছে মুরগির বাচ্চার দাম, লোপাট ৫৪০ কোটি টাকা

ভোক্তা পর্যায়ে দাম সহনীয় রাখতে সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে মুরগি ও ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। তবে এবার নৈরাজ্যের অভিযোগ উঠেছে মুরগির বাচ্চার বাজারদর নিয়ে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিন্ডিকেট করে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণ খামারিদের কাছ থেকে নির্ধারিত দামের চেয়ে মুরগির বাচ্চা প্রতিটিতে ৩০ টাকা অতিরিক্ত হাতিয়ে নিচ্ছেন। এর মাধ্যমে গত ৬০ দিনে (২ মাসে) প্রায় ৫৪০ কোটি টাকা ক্রেতার পকেট থেকে কেটেছেন তারা।

শনিবার (১৬ নভেম্বর) বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ করা হয়েছে।

সংগঠনটির সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার বলেন, মুরগির বাচ্চার দাম কোনো কারণ ছাড়াই অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে অতিরিক্ত মুনাফা নেওয়া হচ্ছে। যা সাধারণ খামারিদের জন্য একটি বড় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এতে দেশের পোল্ট্রি শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের পোল্ট্রি খাত বর্তমানে এক গভীর সংকটের মুখোমুখি। ফিড (খাবার) ও মুরগির বাচ্চার বাজারে কর্পোরেট সিন্ডিকেটের কারণে প্রান্তিক খামারিরা আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। এমন পরিস্থিতি শুধু খামারিরাই নয় বরং দেশের ডিম ও মুরগির বাজারের স্থিতিশীলতাও নষ্ট হচ্ছে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর সরকার ডিম ও মুরগির দাম নির্ধারণ করলেও মুরগির বাচ্চার ক্ষেত্রে কোনো সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। এর সুযোগ নিয়ে কর্পোরেট কোম্পানিগুলো সিন্ডিকেট করে মুরগির বাচ্চার দাম অনেক বাড়িয়েছে।

সুমন হাওলাদার বলেন, সেপ্টেম্বর মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত প্রতিটি মুরগির বাচ্চার দাম ছিল ৩০-৩৫ টাকা। এরপর ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে দাম বাড়িয়ে প্রতিটি মুরগির বাচ্চা ৫৫-১১০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। দেশে প্রতিদিন ৩০ লাখ মুরগির বাচ্চা উৎপাদিত হয়। গড়ে প্রতি বাচ্চায় ৩০ টাকা অতিরিক্ত নিলে ৬০ দিনে সিন্ডিকেটের মুনাফা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৪০ কোটি টাকা।

সিন্ডিকেটের প্রভাব সম্পর্কে তিনি বলেন, সিন্ডিকেটের কারণে খামারিদের উৎপাদন খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে। এতে প্রান্তিক খামারিরা ন্যায্য লাভ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং অনেকেই পোল্ট্রি খাত থেকে সরে যাচ্ছেন। আর কর্পোরেট কোম্পানিগুলো কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাজার অস্থির করে তুলছে। এমন অবস্থায় যদি প্রান্তিক খামারি কমে যায় তাহলে ডিম ও মুরগির সরবরাহও কমে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। যা সরাসরি ভোক্তাদের জন্য বেশব খরচের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

এমন পরিস্থিতিতে পোল্ট্রি খাত বাঁচাতে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, সরকারকে মুরগির বাচ্চা ও ফিডের বাজারে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। কৃত্রিম সংকট রোধে নিয়মিত নজরদারি চালাতে হবে। মুরগির বাচ্চা ও ফিডের জন্য সুনির্দিষ্ট মূল্য নির্ধারণ করে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। মুরগির বাচ্চা ও ফিডের চাহিদা ও সরবরাহ পর্যবেক্ষণ করতে একটি নির্দিষ্ট কমিটি গঠন করতে হবে। খামারিদের উৎপাদন খরচ কমাতে প্রয়োজনীয় উপকরণ সঠিক মূল্যে সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে ক্ষুদ্র খামারিদের টিকিয়ে রাখতে আর্থিক প্রণোদনা এবং সহজ ঋণ দেওয়াও জরুরি।

প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি করতে সরকারি নির্দেশনা জারি করা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

Categories: জাতীয়
Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings