সিলেটে গতকাল সোমবার রাত থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টির কারণে নগরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। জলাবদ্ধতার কারণে ঘরবাড়ি, সড়ক, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় পানি ঢুকেছে।
সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় ১০১ মিলিমিটার ও সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত আরও ৬৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন বলেন, জেলায় আরও বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরের কাজলশাহ, ওসমানী মেডিকেল কলেজ, আখালিয়া, সুবিদবাজার, চৌহাট্টা সিভিল সার্জন কার্যালয়, মেজরটিলা, ইসলামপুর ও দক্ষিণ সুরমার বঙ্গবীর রোড এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় জমে থাকা পানি নামছে ধীরগতিতে।
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসেও জলাবদ্ধতা দেখা গেছে। কলেজের প্রবেশপথ থেকে ক্যাম্পাসজুড়ে হাঁটুসমান পানি। শ্রেণিকক্ষে পানি না ঢুকলেও হাসপাতালের আশপাশে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে শহরের অভ্যন্তরীণ সড়কে যান চলাচল কমেছে। অনেককে ছাতা হাতে প্রয়োজনীয় কাজে বাইরে বের হতে দেখা গেছে।
সিলেটে আজ সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি নামে। ঝুম বৃষ্টির মধ্যে কেউ ছাতা মাথায়, কেউ আবার ভিজেই পথ চলেছেন। মেজরটিলা, সিলেট, ২০ মে
সিলেটে আজ সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি নামে। ঝুম বৃষ্টির মধ্যে কেউ ছাতা মাথায়, কেউ আবার ভিজেই পথ চলেছেন। মেজরটিলা, সিলেট, ২০ মেছবি: আনিস মাহমুদ
নগরের কাজলশাহ এলাকার বাসিন্দা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি ঘরের সামনে পানি। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় পানি বাড়ছিল। একপর্যায়ে ঘরে ঢুকে পড়ে। টানা বৃষ্টি হলেই ঘরে পানি ঢোকে। আগেও এমন অবস্থায় দীর্ঘদিন কেটেছে। এবার মৌসুমের শুরুতেই জলাবদ্ধ হয়েছি। প্রতিবছর এই ভোগান্তি পোহাতে হয়। আমরা এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চাই।’
নগরের মেজরটিলা এলাকার বাসিন্দা কাওসার আহমদ বলেন, মেজরটিলা অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। বিশেষ করে মেজরটিলা বাজারে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হয় সবার। বিগত বছরগুলোয় বিষয়টি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে আনা হলেও এর থেকে উত্তরণ হয়নি।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, ‘বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। পানি দ্রুত নামিয়ে দিতে ড্রেনের ছিদ্র বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আগে যেসব ছিদ্রে নেট বসানো ছিল, সেগুলোও খুলে দেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সিটি করপোরেশন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে। অনেক নালা–নর্দমা ও ছড়ায় ময়লা ফেলে পানি চলাচলের পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আবার আগের নিচু এলাকাগুলো আবাসিক এলাকায় রূপান্তর হওয়ায় পানির ধারণক্ষমতা কমে গেছে। এর ফলে জলাবদ্ধতা বাড়ছে।’
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, সিলেটের নদ–নদীর পানি কিছুটা বেড়েছে। তবে কোনো নদীর পানি এখনো বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি।