X

সুন্দর ফুটবল সুন্দর স্পেন

ব্রাজিল যদি হয় শৈল্পিক ফুটবলের ধারক, তবে বাহক বলতে হবে স্পেনকে! ছোট ছোট পাসের সঙ্গে গতির সমন্বয় মিলিয়ে সে এক অপার সৌন্দর্য। ইউরোতে সেটিই দেখছে বিশ্ববাসী। কোয়ার্টারে অদম্য জার্মানদের বিদায় ঘণ্টা বাজিয়ে তিন দিনের মাথায় সেমিতে ‘টাফ’ ফ্রান্সের মুখোমুখি হয় স্পেন, শিল্প দিয়ে কি এমবাপেদের আটকানো সম্ভব? ‘স্পেন সবসময়ই আকর্ষণীয় ফুটবল খেলে। এটা আমাদের ডিএনএতেই আছে। আমরা সুন্দর ফুটবল খেলতে চাই, পাশাপাশি বাস্তবিকও হতে চাই। নান্দনিক খেলেই ফল বের করে আনতে চাই।’ বলছিলেন কোচ লুইস দে লা ফুয়েন্তে। ফল ২-১’ গোলের জয়। টিকিটাকা ছন্দের কাছে পরাস্ত কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালিস্ট ফরাসিরা। সেই গ্রুপ পর্ব থেকে ইতালি, ক্রোয়েশিয়া, আলবেনিয়া কিংবা জর্জিয়া; ছোট-বড় প্রতিটি দলের বিপক্ষেই শৈল্পিক ফুটবলের অপরূপ সৌন্দর্য ছড়িয়ে ফাইনালে উঠে এসেছে আলভারো মোরাতার দল। যে মুগ্ধতা ছড়িয়ে ছুটে চলেছে স্পেন, সেই আবেশ মেখেই শিরোপার উদ্যাপন করতে চায় তারা। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চূড়ান্ত লড়াইয়েও চোখ জুড়ানো, মন ভরানো ফুটবল উপহার দিতে চান ফুয়েন্তে।

সৌন্দর্যের সঙ্গে কার্যকারিতা মিলিয়েই ফাইনালের মঞ্চে উঠে এসেছে স্পেন।  শুরু হয়েছিল ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয়ে, ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে শক্তিশালী ইতালিকে ১-০তে হারানোর পর শেষ ম্যাচে আলবেনিয়ার বিপক্ষে জয় ১-০ ব্যবধানে। চলতি ইউরোতে সেমিতে খেলা অপর তিন দল ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস ও ইংল্যান্ড যেখানে একাধিক ম্যাচে অন্তিম মুহূর্তে, কখনো আবার টাইব্রেকারে ফল দেখেছে, স্পেন সেখানে প্রতিটি ম্যাচে নিরঙ্কুশ সাফল্য দেখিয়ে এসেছে। শেষ ষোলোয় জর্জিয়াকে উড়িয়ে দিয়েছে ৪-১ গোলে, কোয়ার্টার এবং সেমিতে জার্মানি ও ফ্রান্সের বিপক্ষে সমান ২-১ ব্যবধানে জয়ের পথেও নিজেদের শৈল্পিক ফুটবলের মোহময় সৌন্দর্য বিলিয়ে এসেছে ফুয়েন্তের শিষ্যরা।বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে রবিবার রাতে ইউরোপ সেরার লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে স্পেন ও ইংল্যান্ড। জার্মানির সঙ্গে যৌথভাবে সর্বোচ্চ (৩টি) শিরোপাজয়ী স্পেনের সামনে সুযোগ রেকর্ডটা নিজেদের করে নেওয়ার। টানা দুইবার ফাইনালে ওঠা ইংল্যান্ড প্রথম এই ট্রফির স্বাদ নেওয়ার অপেক্ষায়।

শুরু থেকে অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতা আর নান্দনিকতার সঙ্গে আগ্রাসী ফুটবলের মিশেলে টানা ছয় জয় তুলে নিয়েছে স্পেন। ফ্রান্সের বিপক্ষে সেমিফাইনাল বাধা পার হয়েছে নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে। টুর্নামেন্টের ফেভারিট দলগুলোর একটি ছিল ফ্রান্স। তাদের বিপক্ষে স্পেনকে নামতে হয়েছিল মাঝমাঠের নির্ভরতা পেদ্রি, অভিজ্ঞ রাইট-ব্যাক দানি কারভাহাল, সেন্টার-ব্যাক হবাঁন লু নহমাঁকে ছাড়া। শুরুতে পিছিয়ে পড়ার ধাক্কাও ছিল, কিন্তু চার মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে অপ্রতিরোধ্য যাত্রা ধরে রাখে স্প্যানিশরা।

প্রতিদিন আমরা বিজয়ী অনুভব করি; কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, আমরা মনে করি এরই মধ্যে ইউরো জিতে গিয়েছি। আমাদের ধাপে ধাপে, একটি করে দিন ধরে এগুতে হবে। আমরা সবাই যেটা পেতে চাই, তা অর্জনের জন্য নিজেদের মতো কাজ করি এবং আমরা সেই লক্ষ্য থেকে এক ধাপ দূরে’- ভিভিয়ানের কথাগুলো যেন স্রেফ নিরেট মন্তব্যই নয়; স্পেন দলের আবহ, খেলোয়াড়দের মনের মধ্যে বয়ে চলা আনন্দ, রোমাঞ্চের স্রোতের বহিঃপ্রকাশও। কিন্তু ফাইনালের নিষ্পত্তি যে বাকি এখনো। সম্ভাব্য প্রাপ্তির হাতছানিতে তাই ভেসে যেতে চাইছে না স্পেন।

Main Admin:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings