X

হোপের ৫৭ বলে সেঞ্চুরির জবাবে ডেভিডের ৩৭ বলে সেঞ্চুরি

শাই হোপ, টিম ডেভিড

প্রথম দুই ম্যাচ হেরে সিরিজ হারের দুয়ারে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ রীতিমতো পাহাড় দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার সামনে। শাই হোপের সেঞ্চুরিতে ভর করে ২১৪ রানের পুঁজি পায় ক্যারিবীয়রা। তবে সে এভারেস্টসম রানটাই মামুলি হয়ে গেল অজিদের কাছে। কারণ টিম ডেভিড যে রীতিমতো তাণ্ডবই চালিয়েছেন স্বাগতিক বোলারদের ওপর।

৩৭ বলে তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের প্রথম টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরিটা। তাতে গড়া হয়ে গেছে ইতিহাসও। সে দানবীয় ইনিংসে ভর করে অস্ট্রেলিয়া ২১৫ রান তাড়া করে ফেলেছে ২৩ বল হাতে রেখেই। আর তাতে দুই ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজটাও নিশ্চিত করে ফেলেছে ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) রাতে স্যান্ট কিটসে সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়।

২১৪ রান তাড়া করতে নেমে ৮৭ রানে ৪ উইকেট খুইয়ে বসেছিল ম্যাচের নবম ওভারেই। ‘ডেভিড শো’র শুরু তখনই। অভিষেক সিরিজ খেলতে নামা মিচেল ওয়েনকে নিয়ে পঞ্চম উইকেটে ১২৮ রান যোগ করলেন, তাও মোটে ৪৬ বলে।

ওয়েন যা করেছেন, তাও অসামান্য কিছু নয়। বরং ডেভিডকে এক পাশে রাখলে তার ইনিংসটাকে বেশ ভালোই বলতে হয়। ১৬ বলে ৩ ছক্কা আর ২ চারে তিনি করেছেন ৩৬ রান। কিন্তু ওপাশে যখন কেউ ১১ ছক্কা আর ৩টি চার হাঁকাবেন, তখন তার সামনে এই ইনিংস মামুলি ছাড়া আর কিছুই হয় না।

ডেভিড যখন উইকেটে এলেন, তখন পাওয়ারপ্লে শেষ হয়নি। সবে মিচেল মার্শ বিদায় নিয়েছেন। তার আগে ক্যারিয়ারে মোটে পঞ্চম বারের মতো ওপেন করতে নামা গ্লেন ম্যাক্সওয়েল আর জশ ইংলিসও ফিরে গেছেন সাজঘরে। স্কোরবোর্ডে ৬১ রান ছিল বটে, কিন্তু ২০০ ছাড়ানো লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাওয়ারপ্লেতেই ৩ উইকেট খুইয়ে বসাটা মোটেও শুভ কিছু নয়।

তিনি মাঠে আসার পর ফিরে যেতে দেখলেন ক্যামেরন গ্রিনকেও। লক্ষ্য থেকে তখনও ১২৮ রানের দূরত্বে অজিরা। বল হাতে ছিল ‘মাত্র’ ৬৭টি।

এরপর যে তাণ্ডবটা চালালেন ডেভিড, তাতে ৬৭ বলকে অনেক বেশিই মনে হতে থাকল। ওয়ার্নার পার্কের চারিদিকে একের পর এক বল পাঠাতে থাকলেন। চোটপাটটা সবচেয়ে বেশি গিয়েছে গুদাকেশ মোটির ওপর দিয়ে। ৫টা ছক্কা আর ১টা চার হজম করেছেন তিনি একাই। বাকিরাও কম হজম করেননি। আকিল হোসেন, রস্টন চেজ, রোমারিও শেফার্ডদের সবাই বাউন্ডারি হজম করেছেন তার সামনে।

শেষমেশ ৩৭ বলে সেঞ্চুরিটা পূরণ করেন তিনি। ভেঙে দেন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দ্রুততম টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরির রেকর্ডটা। এই কীর্তিটা এতদিন ছিল জশ ইংলিসের দখলে। এই গেল বছরই তিনি এডিনবরায় স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন ৪৩ বলে। ১ বছর না পেরোতেই আজ সে রেকর্ডটা নিজের করে নিলেন ডেভিড। তার আগে ১৬ বলে করেছিলেন ফিফটি, অজিদের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে এর চেয়ে দ্রুতগতির ফিফটি নেই আর একটিও।

টিম ডেভিডের এটা প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি। তবে তার এই ইনিংসের আগে অভিষেক টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিলেন শেই হোপও। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংসের আদ্যন্ত ব্যাট করে ৫৭ বলে ১০২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। তার ওপেনিং সঙ্গী ব্রেন্ডন কিং ৩৬ বলে ৬২ রান তুলে তাকে দারুণভাবে সঙ্গ দিয়েছিলেন, ১২৫ রানের ওপেনিং জুটিও গড়েছিলেন দুজনে।

তাদের এই ঝড়ে ২১৪ রান তুলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোধ হয় ইনিংস বিরতিতে তৃপ্তির ঢেঁকুরই তুলছিল। তবে স্বাগতিকদের এই তৃপ্তি উবে গেল কিছুক্ষণ পরই। টিম ডেভিডের ঝড়ের কবলে পড়ে সিরিজটাও হাতছাড়া হয়ে গেল আগেভাগেই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২১৪/৪( হোপ ১০২*, কিং ৬২; এলিস ১/৩৭, ওয়েন ১/২৩)
অস্ট্রেলিয়া: ১৬.১ ওভারে ২১৫/৪( ডেভিড ১০২*, ওয়েন ৩৬*; শেফার্ড ২/৩৯, হোল্ডার ১/৩৫)
ফল: অস্ট্রেলিয়া ৬ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: টিম ডেভিড

Md Abu Bakar Siddique:
X

Headline

You can control the ways in which we improve and personalize your experience. Please choose whether you wish to allow the following:

Privacy Settings