নাটক, ওয়েব সিরিজ আর ওয়েব ফিল্মের সফল পথ পেরিয়ে তাসনিয়া ফারিণ এবার পা রাখছেন মূলধারার বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রে। ঈদুল আজহায় মুক্তি পেতে যাচ্ছে তার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য কমার্শিয়াল সিনেমা ‘ইনসাফ’, যেখানে তিনি আসছেন একেবারে নতুন এক রূপে- একজন অ্যাকশনপ্রধান চরিত্রে।
গত রবিবার সন্ধ্যায় ফারিণকে নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে সিনেমাটির প্রথম লুক। পোস্টারে তার হাতে একদিকে রক্তাক্ত কুড়াল, অন্য হাতে একটি গোলাপ। চেহারায় জটিল অভিব্যক্তিÑ ভয়, প্রতিশোধ আর আবেগের মিশেল যেন! ক্যাপশনে লেখা, ‘রক্তের ইনসাফে গোলাপের স্থান নেই…’। পোস্টারটি শুধু সিনেমার পরিচয় নয়, বরং বড় পর্দায় ফারিণের শক্তিশালী আগমনের ঘোষণা।
পরিচালক সঞ্জয় সমাদ্দার জানিয়েছেন, ছবিতে ফারিণের চরিত্রের নাম জাহান। চরিত্রটি বহুমাত্রিক, আবেগপ্রবণ এবং ক্ষিপ্র; যা দর্শককে চমকে দেবে বলে বিশ্বাস পরিচালকের। ফারিণকে কেন এই চরিত্রে নির্বাচন করা হলো জানতে চাইলে সঞ্জয় বলেন, ‘আমার এমন একজন অভিনেত্রী দরকার ছিল যিনি পরিণত অভিনয় করতে পারেন, আবার নতুন নায়িকার মতো দর্শকের সামনে ধরা দেবেন। ফারিণ ঠিক সে রকমই। তার সিনসিয়ারিটি এবং চরিত্র অনুধাবনের ক্ষমতা সিনেমাটিকে অন্য উচ্চতায় নিয়েছে।’
ফারিণ আগে বলেছিলেন, ওয়েব ফিল্ম ‘হাউ সুইট’ ছিল মূলধারার সিনেমার জন্য তার প্রস্তুতি পর্ব। সেই প্রস্তুতি যে যথার্থ ছিল, ‘ইনসাফ’-এর লুকেই তা স্পষ্ট।
সঞ্জয় সমাদ্দার পরিচালিত ‘ইনসাফ’ ছবিটিতে ফারিণ অভিনয় করেছেন শরীফুল রাজের বিপরীতে। র্যাম্প মডেলিং দিয়ে বিনোদন অঙ্গনে শরীফুল রাজের পথচলা শুরু। প্রথম ছবি ‘আইসক্রিম’ দিয়ে নজর কাড়েন। তবে রাজকে বেশি আলোচনায় এনেছে ‘পরাণ’। প্রশংসিত হয় রাজের অভিনয়, লুক, অঙ্গভঙ্গি। এরপর তার অভিনীত ‘হাওয়া’, ‘দামাল’, ‘কাজলরেখা’, ‘দেয়ালের দেশ’ ও ‘ওমর’ মুক্তি পায়। প্রতিটি ছবি কোনো না কোনোভাবে আলোচনায় রেখেছে এই ঢালিউড তারকাকে। গত বছর শেষ করেছেন হাসিবুর রেজা কল্লোলের ‘কবি’র শুটিং। ছবিতে তার সহশিল্পী কলকাতার ইধিকা পাল। এরপর নতুন কোনো ছবিতে অভিনয়ের খবরে ছিলেন না। তবে এই সময়ে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য পড়েছেন, সেখান থেকেই ভালো লেগে যায় ‘ইনসাফ’।
ইতোমধ্যে ‘পরাণ’, ‘হাওয়া’ ও ‘দামাল’-এর মতো ছবিতে দুর্দান্ত অভিনয়ের জন্য প্রশংসিত হয়েছেন রাজ। ‘ইনসাফ’-এ তার লুক প্রকাশ পায় গত ২৫ এপ্রিলÑ হাতে রক্তাক্ত কুড়াল, ঠোঁটে রহস্যময় হাসি, মুখে রক্তের ছাপ আর ক্যাপশন ছিল, ‘ইনসাফ শুধু একটি শব্দ নয়, এটি একটি জীবনবোধ।’ পরবর্তীতে সিনেমার আরেক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে যুক্ত মোশাররফ করিম। তার পোস্টারে লেখা, ‘এই ডাক্তার রোগ নয়, পাপ সারায়! রক্তই তার ভাষা, ইনসাফই তার শপথ!’ যা সিনেমাটির থ্রিলার ও প্রতিশোধমূলক আবহ বোঝায়।
‘ইনসাফ’ শুধু একটি সিনেমা নয়, এটি সম্ভবত ঢাকাই চলচ্চিত্রে একটি নতুন ধারা শুরুর ইঙ্গিত। যেখানে শক্তিশালী নারী চরিত্র, প্রাসঙ্গিক সামাজিক বার্তা এবং অ্যাকশন-ড্রামার সংমিশ্রণে উঠে আসবে এক নতুন গল্প।