ইরান তার ৬০ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (IAEA)। সংস্থার সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৭ মে পর্যন্ত ইরান ৪০৮ দশমিক ৬ কেজি উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুত করেছে—যা অস্ত্র-গ্রেড ইউরেনিয়ামের মাত্রার অত্যন্ত কাছাকাছি।এপি-র বরাত দিয়ে জানা গেছে, ফেব্রুয়ারির তুলনায় এই মজুত প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। সে সময় ইউরেনিয়ামের পরিমাণ ছিল ২৭৪ দশমিক ৮ কেজি। এই বৃদ্ধিকে নজিরবিহীন বলে উল্লেখ করেছে IAEA, কারণ পারমাণবিক অস্ত্র না রাখা কোনো দেশের ক্ষেত্রে এত বেশি মাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম রাখার ঘটনা আগে ঘটেনি।এমন এক সময় এই তথ্য সামনে এলো, যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে নতুন পারমাণবিক আলোচনার সম্ভাবনা নিয়ে প্রস্তুতি চলছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে ইরানের বেশ কিছু গোপন আলোচনা হয়েছে বলেও খবর রয়েছে।
IAEA-র প্রতিবেদন সম্পর্কে ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য দেয়নি। তবে চলতি মাসের শুরুতে তেহরানে এক বক্তৃতায় ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পারমাণবিক প্রযুক্তি ব্যবহারের অধিকার রাখি। ইরান কখনও পরমাণু অস্ত্র চায়নি বা বিশ্বাস করে না।”তিনি আরও বলেন, “কিছু পশ্চিমা দেশ বারবার অভিযোগ করছে যে, আমরা অস্ত্র তৈরি করছি। এটি ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমাদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উন্নয়নের একমাত্র লক্ষ্য জনগণের কল্যাণ।”
প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় একটি ইরানি রাজনৈতিক সূত্র লেবাননের আল মায়াদিনকে জানিয়েছে, ইউরোপীয় ত্রয়ী—ফ্রান্স, জার্মানি এবং যুক্তরাজ্য—IAEA-এর ওপর চাপ সৃষ্টি করছে যেন তারা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আরও কঠোর ও নেতিবাচক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের ইউরেনিয়াম মজুদের এই অগ্রগতি আন্তর্জাতিক আলোচনার ক্ষেত্রকে আরও জটিল করে তুলতে পারে এবং পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবনের সম্ভাবনায় নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে।