ঢাকাই শোবিজ অঙ্গনের প্রিয়মুখ আফ্রি সেলিনা। বিজ্ঞাপন থেকে শুরু করে অভিনয় করেছেন নাটক ও সিনেমায়-সব জায়গায় বিচরণ ছিল এই তারকার । হঠাৎ করেই লন্ডনে পা রেখেছেন তিনি । সেখানে পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন আছে, তাদের সঙ্গেই সাধারণ জীবনযাপনে নিজেকে অভ্যস্ত করতে চাইছেন।
ঠিক কি কারণে লন্ডনে যাবার পর কেনো আর তিনি দেশে ফিরছেন না ? তাহলে কি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এই তারকা ।
লন্ডন থেকে মুঠোফোনে আফ্রি সেলিনা জানান, ৫ আগস্টের পর আমার দুইটা ভিডিও আমাকে এই পরিণতিতে এনে দিয়েছে। যেই জায়গা থেকে আমি এটা করেছিলাম সেটা ছিল, দেশের একজন নাগরিক হিসেবে একটা প্রশ্নের উত্তর জানা। আমি একটা ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম যে, এই দিন আর কতদিন চলবে ? কতদিন চলবে এই অবস্থা ? কোনো দলের হয়ে তা আমি এটা দেইনি । একজন নাগরিক হিসেবে এটা আমার প্রশ্ন ছিল । এটাই যখন এত বড় একটা ভুল হয়েছে, তখন আজকে বুঝতে পারছি যে কী করলাম! তবে আমাকে প্রতিনিয়ত দেশে থাকাকালীন বুলিং করা হয়েছে ফেসবুকে এবং ফোনে। এমনকি দেশের বাইরে এসেও অনেক বুলিং এর শিকার হয়েছি আমি ।
বললেন, ওটাকে (ভিডিও) কেন্দ্র করে, ট্রিগার করে আমাকে এত এত বুলিং করা হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুক, বিজনেস পেইজ ব্লক করা, হোয়াটসঅ্যাপ থেকে ব্যক্তিগত নাম্বার থেকে এত ট্রিগার করা হয়েছে, বুলিং করা হয়েছে যার কোনো কিছুই নেওয়া যাচ্ছিল না। আর নিতে পারছিলাম না। আমার ফেসবুকে রিপাের্ট করে দেয়া হয়েছিল, নানা ধরনের হুমকি আসত । তাই সবকিছু ছেড়ে সেই জায়গা থেকে দেশ ছেড়ে আমি এখন বিদেশের মাটিতে।
নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে তিনি বলেন, দেশে আমার অনেক কষ্টের ক্যারিয়ার, এই ক্যারিয়ার অনেক তিলে তিলে গড়েছি। কে বা কারা এটা শেষ করে দিচ্ছে তা আমি নিজেই বুঝছি না । সবশেষ গ্রোসারী শপিংয়ে মাস্টারকার্ড এর একটা ফটোসেশনে কাজ করেছিলাম । আমি কখনোই কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলাম না। শিল্পচর্চাটাই করে গেছি। শুধু জুলাই আন্দোলনের সময় একজন সচেতন মানুষ হিসেবে দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে দু-একটা প্রশ্ন করেছিলাম সোশ্যাল মিডিয়ায়। এটুকু অধিকারও কি একজন নাগরিক হিসেবে আমার নেই? কিন্তু সেই থেকে শুরু হয় আমাকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখালেখি। আমার কমেন্ট বক্সে হত্যার হুমকি, শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছি। আমি আর দেশে থাকতে পারিনি। বাধ্য হয়ে লন্ডনে পাড়ি জমাই। দেশে ফেরা নিয়ে জানি না, তবে ঠিকভাবে বাঁচতে চাই আমি ।
উল্লেখ্য, দিল্লিতে জন্ম হলেও পাঁচ বছর বয়সে বাংলাদেশে চলে আসেন আফ্রি সেলিনা। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ‘অন্যপথ’। নাঈম তালুকদারের পরিচালনায় এই ছবিতে আফ্রি অভিনয় করেছিলেন ইন্দ্রনীল সেনগুপ্তের বিপরীতে। তবে ছবিটির কাজ এখনো অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে। এরপর অনন্য মামুন নির্দেশিত আনিসুর রহমান মিলনের বিপরীতে ‘রোমান্স’ চলচ্চিত্রেও কাজ করেছেন তিনি। এ ছাড়া ইদ্রিস হায়দার নির্দেশিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘নীল ফড়িং’-এর কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন আফ্রি। তাঁর নায়ক হিসেবে এ সিনেমায় কাজ করেন শিপন মিত্র। এছাড়া বাংলাদেশ ও লন্ডনের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত মিনহাজ কিবরিয়া পরিচালিত ‘বিফোর আই ডাই’ সিনেমায়। এ ছবিতে তার বিপরীতে ছিলেন বিট্রিশ অভিনেতা ইফতেখার আহমেদ।