শেরপুরের শ্রীবরদীর পাহাড়ি গ্রামে বিদেশি জাতের আঙুর চাষ করে সাড়া ফেলেছেন তরুণ উদ্যোক্তা মিজানুর রহমান। তার বাগানে এখন ৫০ জাতের আঙুর চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে সাতটি জাতে ফল ধরেছে। লাল, কালো ও সবুজ আঙুর দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন অনেকে। কৃষি বিভাগ বলছে, মিজানুরকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। পাহাড়ি অঞ্চলে আঙুর চাষের এই সাফল্য দেখে অনেকেই উৎসাহী হচ্ছেন। কেউ কেউ চারা নিতে চাইছেন, কেউ আবার পরামর্শ নিচ্ছেন বাগান তৈরির।
সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উঁচু মাচায় ঝুলে আছে থোকা থোকা বিদেশি আঙুর। কেউ ছিঁড়ে খাচ্ছেন, কেউ ছবি তুলছেন। লাল, কালো ও সবুজ এই আঙুর যেমন মিষ্টি, তেমনি রসালো। বাগান দেখতে আশপাশের এলাকা থেকে মানুষ ভিড় করছেন।
মিজানুর বলেন, ‘আগে আমার বাবা শুধু সবুজ জাতের কয়েকটি চারা এনে চাষ করেছিলেন। আমি বড় পরিসরে শুরু করেছি। ভবিষ্যতে আরও বড়ভাবে বাণিজ্যিক চাষ করার ইচ্ছা আছে।’ তিনি জানান, এই এলাকায় আঙুরগাছে ছত্রাকনাশক ব্যবহার করলেও অন্য রাসায়নিক তেমন প্রয়োজন পড়ে না। মাটিও বেশ অনুকূল।
বাগান দেখতে আসা এলাকার বাসিন্দা আশিকুর রহমান বলেন, ‘গাছ থেকে ছিঁড়ে খাইলাম, অনেক মিষ্টি আর রসালো। এখন আর শ্রীবরদী বাজারে যাইতে হইবে না। মিজানুর ভাইয়ের কাছ থেকেই আঙুর নেব।’ স্থানীয় কৃষক হযরত আলী বলেন, ‘এই কালো-লাল আঙুর যে পাহাড়ে হবে তা বিশ্বাসই করতে পারি নাই। বিদেশি ফল বলে জানতাম। এখন নিজেরও আগ্রহ হইতেছে আঙুর চাষ করার।’ পাশের আরেক কৃষক লুৎফর রহমান বলেন, ‘অসম্ভব ব্যাপার। পাহাড়ে আঙুর ভাবতেই পারি নাই। খাইলাম- মিষ্টিও, রসালো। বাজারের চেয়ে ভালো। আমি পরামর্শ নিতে আসছি, আমার জমিতেও করব।’ উদ্যোক্তার বাবা জলিল মিয়া জানান, ‘প্রথমে ভারত থেকে কয়েকটি চারা এনেছিলাম শখের বসে। পরে ধাপে ধাপে আরও আনলাম। ভাবছিলাম হবে না। কিন্তু ফল আসল। এবার আমার ছেলে করছে, তার বাগানে ৫০ জাতের আঙুর আছে।’
শ্রীবরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাবরিনা আফরিন বলেন, ‘ওই বাগান আমি দেখেছি। এখন তারা পরীক্ষামূলকভাবে করছেন, সামনে বড় আকারে বাণিজ্যিকভাবে করার পরিকল্পনা আছে। কৃষি বিভাগ থেকে আমরা সহযোগিতা করছি।’ জেলা কৃষি বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘এই এলাকার মাটি আঙুর চাষের জন্য খুবই উপযোগী। মিজানুরকে আমরা সহযোগিতা করছি। যদি আরও কেউ আগ্রহী হয়, তাদেরকেও সহায়তা করব।’