পত্রিকার পাতা
ঢাকাশুক্রবার , ৩রা অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উদ্যোক্তা
  5. কর্পোরেট
  6. কৃষি ও প্রকৃতি
  7. ক্যাম্পাস-ক্যারিয়ার
  8. খেলাধুলা
  9. চাকরির খবর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. তারুণ্য
  13. ধর্ম
  14. পর্যটন
  15. প্রবাস
আজকের সর্বশেষ সব খবর

ট্রাইব্যুনালে ডা. মোস্তাকে অনেকের মাথা দিয়ে গুলি ঢুকে পেট দিয়ে বেরিয়ে গেছে

Md Abu Bakar Siddique
আগস্ট ২৭, ২০২৫ ১০:২৭ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসা নিতে আসা অনেকেরই মাথা দিয়ে গুলি ঢুকে পেট দিয়ে বেরিয়ে গেছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আবাসিক সার্জন ডা. মোস্তাক আহমেদ গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্যে এ কথা বলেন।তিনি বলেন, ‘সাধারণত বুকে গুলিবিদ্ধ হলে তা পিঠ দিয়ে বেরিয়ে যায়, কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ অনেকের ক্ষেত্রে এমনটি হয়নি। এসব রোগীর মাথায় গুলি লেগে তা পেট দিয়ে বেরিয়ে গেছে। আবার বুক দিয়ে গুলি ঢুকে তা সমান্তরালভাবে না বেরিয়ে পেট দিয়ে বেরিয়ে গেছে। এতে বুঝতে পারি যে, ওপরে হেলিকপ্টার কিংবা উঁচু দালান থেকে গুলি করা হয়েছে।’ তিনি মঙ্গলবার (২৬আগস্ট) বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ উপস্থিত হয়ে সাক্ষ্য দেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে করা মামলায় ওই সাক্ষ্য দেন।এ সময় অভিযুক্ত চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ট্রাইব্যুনালে হাজির ছিলেন। সকালে তাকে কারাগার থেকে এনে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তিনি অপরাধ স্বীকার করে ইতোমধ্যেই রাজসাক্ষী হয়েছেন। বর্তমানে রাজসাক্ষীর মর্যাদায় কারাগারে আছেন। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকেই পলাতক।জবানবন্দিতে ডা. মোস্তাক বলেন, ‘গুলিবিদ্ধদের চিকিৎসায় বাধা দেন তৎকালীন সরকার-সমর্থিত স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ তথা স্বাচিপের চিকিৎসকরা। এমনকি তারা আহতদের ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে সেবা দিতে বারণও করেন। তারা বলেন- এরা সন্ত্রাসী, এদের চিকিৎসা দেওয়া যাবে না।’

ডা. মোস্তাক বলেন, ‘গত বছরের ১৯, ২০ ও ২১ জুলাই এবং ৪ ও ৫ আগস্ট সবচেয়ে বেশিসংখ্যক গুলিবিদ্ধকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।ক্যাজুয়ালটি বিভাগে চাকরির সুবাদে আমি আগেও অনেক গুলিবিদ্ধকে সেবা দিয়েছি। তবে গত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আহতদের ধরন ছিল কিছুটা ভিন্ন। তাদের গুলির ডিরেকশন ছিল ওপর থেকে নিচের দিকে। সাধারণত গুলির ডিরেকশন থাকে নিচ থেকে ওপরে বা সমান্তরাল। এক্ষেত্রে কোনো উঁচু জায়গা বা হেলিকপ্টার থেকে গুলি করা হয়েছে। আন্দোলন চলাকালে এক দিন একটি পরিবারের বাবা-ছেলে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে আসেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাবা মারা যান। এতে ছেলে আক্ষেপ করে বলেন- ‘বাবাকে বাঁচাতে পারলাম না। এ ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী আমি।’ডা. মোস্তাক বলেন, ‘আহতদের বেশির ভাগের বয়স ছিল ২০-৩০ বছরের মধ্যে। আন্দোলন চলাকালে ঢাকা মেডিকেলের শহীদুল্লাহ হল-সংলগ্ন গেট দিয়ে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স থামিয়ে পরিচয় জানতে চাইতেন ছাত্রলীগের ছেলেরা। ছাত্র পরিচয় পেলে ঢুকতে বাধা দিতেন তারা। কেউ কোনোভাবে হাসপাতালে ঢুকতে পারলেও চিকিৎসা চলাকালে ছাত্রলীগের সশস্ত্র কর্মীরা হাসপাতালে ঢুকে খোঁজখবর নিতেন আহত কারা। তখন গুলিবিদ্ধ ছাত্ররা নিজেদের পরিচয় গোপন রাখার জন্য আমাদের অনুরোধ করেন। গুলিবিদ্ধ ছাত্রদের চিকিৎসা দিতে আমাদেরকে অতি উৎসাহী হতে বারণ করেন আওয়ামী লীগ সরকার সমর্থিত স্বাচিপের কতিপয় চিকিৎসক। এমনকি গুলিবিদ্ধ ছাত্রদের চিকিৎসা দেওয়ার কারণে গত বছরের ২৫ জুলাই আমাদের পাঁচজন চিকিৎসককে অন্যত্র বদলি করা হয়। আহতদের চিকিৎসায় বাধা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই বদলি করা হয়।’

গতকাল ডাক্তার মোস্তাকসহ চারজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। অপর চারজন হলেন- স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মফিজুর রহমান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মনিরুল ইসলাম, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা. মোস্তাক আহমেদ, ফেনীর ব্যবসায়ী আহত নাসির উদ্দিন ও শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের নানা মো. সাঈদুর রহমান। বেলা ১১টা ২৫ থেকে বিকেল ৪টা ১০ মিনিট পর্যন্ত সাক্ষ্য গ্রহণ চলে। মাঝে কিছু সময়ের জন্য বিরতি দেওয়া হয়। জবানবন্দি শেষে সাক্ষীদের জেরা করেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। সাক্ষ্য গ্রহণের সময় চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এস এইচ তামিমসহ অন্য প্রসিকিউটররা ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। এ মামলায় মোট ৮১ জন সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত ২৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হলো। আগামী সোমবার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল। এ মামলায় চলতি বছরের ১২ মে প্রসিকিউশনের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করেন তদন্ত সংস্থার উপপরিচালক মো. আলমগীর। প্রতিবেদন যাচাই ও পর্যালোচনা শেষে ১ জুন ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। অপরাধ সংঘটনের তারিখ দেওয়া হয় ১৪ জুলাই সকাল থেকে ৫ আগস্ট সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত। অভিযোগপত্রে আসামিদের বিরুদ্ধে মোট ৫টি অভিযোগ আনা হয়। ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। গত ৩ আগস্ট সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।