পত্রিকার পাতা
ঢাকারবিবার , ২৭শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উদ্যোক্তা
  5. কর্পোরেট
  6. কৃষি ও প্রকৃতি
  7. ক্যাম্পাস-ক্যারিয়ার
  8. খেলাধুলা
  9. চাকরির খবর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. তারুণ্য
  13. ধর্ম
  14. পর্যটন
  15. প্রবাস
আজকের সর্বশেষ সব খবর

জোনাকির আলোয় বৈদ্যুতিক বাতির বিকল্প!

Md Abu Bakar Siddique
জুলাই ১৭, ২০২৫ ১১:১২ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

রাতের নিস্তব্ধ অন্ধকারে মিটমিট করে জ্বলা জোনাকির আলো শুধু আমাদের চোখই জুড়ায় না, এটি ভবিষ্যতের টেকসই শক্তির এক অনন্য দিশাও দেখাচ্ছে। এই ক্ষুদ্র প্রাণীটির শরীরে লুকিয়ে থাকা রহস্যময় আলো উৎপাদনের পদ্ধতি হয়তো এক দিন আমাদের বিদ্যুতের চাহিদা মেটানোর নতুন পথ দেখাবে।

বৈজ্ঞানিক গবেষণার অগ্রগতি আজ আমাদের নতুন সম্ভাবনার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন গবেষণাগারে বিজ্ঞানীরা জোনাকির এই প্রাকৃতিক আলো উৎপাদন পদ্ধতি কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন। তারা এমন জীবন্ত আলো তৈরি করতে চাইছেন যা রাস্তার বাতি বা অফিসের আলো হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ক্ষেত্রেও এই প্রযুক্তি বিপ্লব আনতে পারে; কোষের ভিতরের অণুজীব পর্যবেক্ষণ থেকে শুরু করে রোগ শনাক্তকরণের নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবনে।

এই গবেষণার একটি চমকপ্রদ দিক হলো-জিনপ্রযুক্তির ব্যবহার। বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যেই জোনাকির জিন ব্যবহার করে গাছপালাকে আলোকিত করার পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন। ভাবুন তো, এমন এক ভবিষ্যতের কথা যেখানে রাস্তার পাশের গাছগুলোই সূর্যাস্তের পর প্রাকৃতিক আলো বিকিরণ করবে! ফ্রান্স ও আমেরিকার কিছু গবেষণাগারে এ ধরনের আলোকিত গাছ ও শৈবাল নিয়ে ইতোমধ্যে কাজ চলছে।

জোনাকির দেহে ঘটে চলেছে এক অসাধারণ রাসায়নিক প্রক্রিয়া। লুসিফেরিন নামক এক বিশেষ পদার্থ লুসিফেরেজ এনজাইমের উপস্থিতিতে অক্সিজেনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে তৈরি করে সেই মোহনীয় আলো। বিজ্ঞানের ভাষায় এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় বায়োলুমিনেসেন্স। এই আলোর সবচেয়ে বিস্ময়কর দিক হলো এর শতভাগ দক্ষতা। সাধারণ বৈদ্যুতিক বাল্ব বা এমনকি আধুনিক এলইডি লাইটেও কিছুটা তাপ অপচয় হয়, কিন্তু জোনাকির আলো সম্পূর্ণ তাপহীনভাবে উৎপন্ন হয়। তবে এই প্রযুক্তির সামনে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। জোনাকির আলোর তীব্রতা এখনো বেশি আলোর চাহিদা মেটানোর জন্য পর্যাপ্ত নয়। জৈবপ্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃত্রিমভাবে এই পদ্ধতি বড় আকারে প্রয়োগ করা বেশ ব্যয়বহুল। আর জিন-সম্পাদিত জীব ব্যবহার করলে পরিবেশের ওপর এর প্রভাব কেমন হবে, সে বিষয়েও নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন।

তবুও এই গবেষণা আমাদের জন্য আশাব্যঞ্জক। বিশেষ করে যেসব অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহের সুবিধা নেই, সেখানে এই প্রাকৃতিক আলো উৎপাদন পদ্ধতি একটি কার্যকর সমাধান হতে পারে। হয়তো এক দিন প্রকৃতির এই ক্ষুদ্র শিক্ষক থেকেই আমরা শিখে নেব শক্তির এক নতুন ভাষা।

লেখক : পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।