যুক্তরাষ্ট্রে এমবিএ করার স্বপ্ন নিয়ে ঘুরছেন আশিস চৌহান (ছদ্ম নাম)। আগামী বছর মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চান তিনি, তবে বর্তমানে মার্কিন ভিসা নীতির কারণে উদ্বেগে আছেন। ট্রাম্প প্রশাসনের সমর্থকরা উদ্বেগজনক ভিসা নীতির কারণে এইচ-১বি ভিসা কর্মসূচির ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা প্রশ্ন উত্থাপন করছেন।
এইচ-১বি ভিসা কর্মসূচির আওতায় দক্ষ বিদেশি কর্মীরা যুক্তরাষ্ট্রে আসেন, কিন্তু এটি সমালোচনা এবং প্রশংসার মধ্য দিয়ে চলছে। এক সময় এই কর্মসূচির সমালোচক হলেও, এখন ট্রাম্প এবং ধনকুবের ইলন মাস্ক এই কর্মসূচির সমর্থক। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিভাবান কর্মীদের আকৃষ্ট করা সম্ভব। বর্তমানে এইচ-১বি ভিসা প্রাপ্তদের মধ্যে ৭২ শতাংশ ভারতীয়, এবং তাদের অধিকাংশই বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, গণিত বা ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে কর্মরত।
এইচ-১বি ভিসা উদ্বেগের কারণ, এটি বৃহত্তর অভিবাসন বিতর্কের সঙ্গে সম্পর্কিত। ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন বেড়েছে ১৬ লাখ, যা গত ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। মেক্সিকানদের পর ভারতীয়রা দ্বিতীয় বৃহত্তম অভিবাসী গোষ্ঠী। এই অভিবাসন বৃদ্ধির ফলে অনেক মার্কিন নাগরিক চাকরির সম্ভাবনা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন।
ভারতীয়রা যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করতে এসে ঋণের ওপর নির্ভর করে থাকেন, এবং ভিসা আটকে গেলে তাদের পরিবার বড় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। তবে চৌহান, যিনি যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা নিতে চান, বলেছেন যে তার উচ্চাকাঙ্ক্ষা ব্যাহত হতে পারে না, যদিও ভিসা নীতি নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।
এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম মেয়াদে এইচ-১বি ভিসার আবেদন যাচাই ও জালিয়াতি শনাক্তকরণের প্রক্রিয়া কঠোর করা হয়েছিল। ফলে, ২০১৮ সালে প্রত্যাখ্যানের হার ২৪ শতাংশে পৌঁছেছিল। নতুন প্রশাসন এর মধ্যে বিভিন্ন মতপার্থক্য রয়েছে, যেখানে কিছু কর্মকর্তারা এইচ-১বি ভিসা সংরক্ষণ করতে চান, আবার অন্যরা অভিবাসন সীমাবদ্ধ করতে চাইছেন।
এইচ-১বি ভিসা কর্মসূচি ভারতীয়দের জন্য আকর্ষণীয় কারণ এটি উচ্চ বেতন উপার্জনের সুযোগ প্রদান করে। তবে অনেকেই এটি স্থায়ী বসবাস বা গ্রিন কার্ড প্রাপ্তির পথে একটি ধাপ হিসেবে দেখেন।
এক্ষেত্রে, শিবেন্দ্র সিং, ন্যাসকমের ভাইস প্রেসিডেন্ট, বলেছেন, ভারতীয় প্রযুক্তি শিল্প সংস্থাগুলো মার্কিন কর্মীদের অগ্রাধিকার দেয় এবং যখন তারা স্থানীয় দক্ষ কর্মী পায় না, তখন এইচ-১বি ভিসা দিয়ে বিদেশি কর্মী নিয়োগ করে।
বর্তমানে, গ্রিন কার্ডের জন্য ১০ লাখ ভারতীয় অপেক্ষা করছেন, যা প্রক্রিয়াটি দীর্ঘ সময় নিবে। এই পরিস্থিতিতে অভিবাসী শিক্ষার্থীদের উচিত, তাদের পছন্দ অনুযায়ী সেরা কলেজ বেছে নেওয়া এবং ভালো ইমিগ্রেশন কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া।