মুরগি পালনে সফল বাগেরহাটের ডাবলু যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন অনেক যুবক পোলট্রি খামার ও মাছ চাষে স্বাবলম্বী হয়েছেন। ডাবলু তাদের মধ্যে অন্যতম
বাগেরহাট সদর উপজেলার রণবিজয়পুর গ্রামের সৈয়দ মাহমুদ হাসান ডাবলু (৩৭)। তিনি এখন সফল পোলট্রি খামারি হিসেবে পরিচিত। ডাবলু ২০ বছর আগে মাত্র ৪০০ পোলট্রি মুরগির বাচ্চা এনে মুরগি পালনের কাজ শুরু করেছিলেন। তবে শুরুতে বিভিন্ন প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার কারণে তিনি তেমন সফলতা পাননি। মুরগির ব্যবসা শুরুর পর তিনি আবহাওয়া ও লবণাক্ততার কারণে কিছুটা হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। তবে তিনি হার মানেননি। খবর বাসসের।ডাবলু লেয়ার মুরগির বাচ্চা নিয়ে খামারের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে থাকেন। একসময় তার খামার ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে তিন মাসের ট্রেনিং নিয়েছিলেন তিনি, যার ফলে তার ব্যবসা আরও লাভজনক হয়। পরে তিনি পরপর তিনবার ঋণগ্রহণ করে ব্যবসা সম্প্রসারণ করেন।
বর্তমানে ডাবলুর খামারে রয়েছে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার লেয়ার মুরগি। তিনি রংপুর নারিস হ্যাচারি থেকে সরাসরি মুরগির বাচ্চা অর্ডার দেন। খামারের শেডগুলোতে সঠিকভাবে মুরগির যত্ন নেন। তার খামারে ৩ হাজার ২০০ বাচ্চা ব্রোডিং নার্সিং তত্ত্বাবধানে ২৮ দিন পর পর দ্বিতীয় শেডে স্থানান্তরিত হয়। সঠিকভাবে পরিচর্যা করার কারণে মুরগিগুলো পাঁচ মাস পর থেকে দুই বছর পর্যন্ত ডিম দেওয়া শুরু করে। এরপর মুরগিগুলো বিক্রি করে দেওয়া হয়।ডাবলু জানান, তিনি শীত মৌসুমের তিন মাস ছাড়া সব সময় ভালো দাম পান। তার পরিশ্রমী মনোভাব ও দৃষ্টান্তমূলক কাজের জন্য তিনি জাতীয় যুব পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তার সফলতার ফলে রণবিজয়পুরের অনেক যুবকও লেয়ার মুরগির ফার্ম করে সফল হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘খামারের মুরগির শেডে ঢোকার সময় আমি নিয়মিত জীবাণুনাশক স্প্রে করি যাতে কোনো জীবাণু আক্রমণ করতে না পারে।’ তার সহকর্মী হিসেবে কাজ করছেন তার বোন নওশীন শারমিন ও আরও চারজন কর্মচারী। মুরগির খামারে কাজ করতে গিয়ে মাঝে মাঝে লোডশেডিংয়ের কারণে সমস্যা হয়। কিন্তু ডাবলু কোনো সময় পরিশ্রমের ত্রুটি করেন না।
তার খামারের ব্যবসায়ীরা অগ্রিম অর্ডার দিয়ে মুরগি ও ডিম কিনে লাভবান হচ্ছেন। মুকুল ও জাকির নামের স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, তারা ডাবলুর খামার থেকে নিয়মিত পণ্য কিনে লাভ করছেন।যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. সোহরাব হোসেন বলেন, ‘যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন অনেক যুবক পোলট্রি খামার ও মাছ চাষে স্বাবলম্বী হয়েছেন। ডাবলু তাদের মধ্যে অন্যতম।’ডাবলুর এই সফলতার পরিপ্রেক্ষিতে জেলার যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আব্দুল কাদির বলেন, ‘সরকার যুবসমাজকে আলোকিত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তারা মাছ, মাংস, ডিম উৎপাদন করে মানুষের প্রোটিন চাহিদা পূরণ করছেন।’