ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের ক্ষমতায় ফিরলে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির খোলনলচে পাল্টে যাবে। দেশটির অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক নীতি কাঠামো ভেঙে এক নতুন ব্যবস্থা প্রবর্তনের ‘নীলনকশা’ কষে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে রক্ষণশীল রিপাবলিকানরা। দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্পের সম্ভাব্য ক্ষমতাকাল কেমন হতে পারে, এরই মধ্যে তার একটি খসড়া তৈরি করেছেন রিপাবলিকান চিন্তাবিদ ও ট্রাম্পের অনুগামী বিশেষজ্ঞরা। এ খসড়া ‘নীতি পরিকল্পনা’ কে বলা হচ্ছে ‘প্রজেক্ট টু থাউজ্যান্ড টোয়েন্টিফাইভ’ বা ‘প্রকল্প ২০২৫’। খবর আলজাজিরা অনলাইনের।
প্রশাসনে ডানপন্থিদের আধিপত্য সৃষ্টি, প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা সম্প্রসারণ, পারমাণবিক অস্ত্র ভা-ার বড় করা, চীনের বৈশ্বিক উত্থান রুখে দেওয়া, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার তহবিলে অর্থ জোগান বন্ধ করা, ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ইউএসএআইডি) মতো সংস্থার জন্য বরাদ্দ কমিয়ে অভ্যন্তরীণ সমস্যায় মনোযোগ দেওয়াসহ পররাষ্ট্রনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের রূপরেখা বর্ণনা করে ‘প্রজেক্ট ২০২৫’ প্রণয়ন করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নেতা হিসেবে এ মুহূর্তে জনপ্রিয়তা জরিপে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন ট্রাম্প। আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ের আভাসও মিলছে। ইপসোসের জরিপ অনুযায়ী, জনপ্রিয়তার বর্তমান হার ধরে এগুলে ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি ওভাল অফিসে আবার অধিষ্ঠান হবে ট্রাম্পের। তা যদি হয়, তাহলে কেমন হতে পারে তার দ্বিতীয় মেয়াদের ক্ষমতাকাল? এ নিয়ে শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, কৌতূহল রয়েছে বিশ্বজুড়েই।
যেটি ১৯৮০’র দশকে প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগানের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের জন্য ‘নীতি পরিকল্পনা’ তৈরি করে এবং সেগুলো প্রেসিডেন্টকে দিয়ে কেন্দ্রীয় প্রশাসনে এবং বহির্বিশ্বে বাস্তবায়ন করায় তারা। ১৯৮১ সাল থেকে সম্ভাব্য রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টদের জন্য এ ধরনের প্রকল্প প্রণয়ন করে আসছে হেরিটেজ। এই ‘প্রকল্প প্রস্তাব সমগ্র’ রিপাবলিকানদের কাছে ‘পলিসি বাইবেল’ হিসেবে সামদৃত। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে হেরিটেজ প্রণীত এবারের ৯২২ পৃষ্ঠার প্রকল্পটি ট্রাম্পের জন্য নিদের্শিকা পুস্তিকা হিসেবে কাজ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ‘প্রজেক্ট ২০২৫’ নিয়ে একটি পর্যালোচনা হাজির করেছে আলজাজিরা, যেখানে ট্রাম্পবিরোধীরা বলছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘ভয়ংকর বিপর্যয়’ ডেকে আনবে।
ট্রাম্প পুনরায় ক্ষমতায় বসলে অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক সহায়তা কর্মসূচি সংকুচিত করবে যুক্তরাষ্ট্র, যা ‘প্রজেক্ট ২০২৫’-এ বর্ণনা করা হয়েছে। হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের মার্গারেট থ্যাচার সেন্টার ফর ফ্রিডমের জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো ম্যাক্স প্রিমোরাচক বাইডেনের আমলে নেওয়া ইউএসএআইডির কাজের ধারণাগুলো মোটেও পছন্দ করছেন না।
ট্রাম্প ফের ক্ষমতায় ফিরলে ইউএসএআইডির কার্যক্রম থেকে ‘জেন্ডার’, ‘জেন্ডার ইকুয়ালিটি’, ‘জেন্ডার ইকুইটি’, ‘জেন্ডার ডাইভারস ইন্ডিভিজুয়ালস’, ‘জেন্ডার অ্যাওয়ার’, ‘জেন্ডার সেনসিটিভ’, ‘অ্যাবরশন’, ‘রিপ্রডাক্টিভ হেলথ’, ‘সেক্সুয়াল অ্যান্ড রিপ্রডাক্টিভ রাইটস’ টার্মগুলো তুলে দেবেন।