রমজান মাসে রোজা পালন মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এই মাসে সিয়াম সাধনা বা রোজা রাখা ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভের মধ্যে একটি। তবে কিছু বিশেষ কারণে রোজা ভেঙে যেতে পারে এবং সেই ক্ষেত্রে কাজা ওয়াজিব (বাকি রোজা রাখতে হবে) হয়। নীচে রোজা ভেঙে যাওয়ার কিছু সাধারণ কারণ উল্লেখ করা হল:
১. খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ
রমজান মাসে রোজা অবস্থায় খাদ্য, পানীয় বা অন্য কোনো পুষ্টি গ্রহণ করা রোজা ভেঙে ফেলে। উদাহরণস্বরূপ, সেহরি বা ইফতার ছাড়া যদি কোনো খাবার বা পানীয় গ্রহণ করা হয়, তবে রোজা ভেঙে যাবে এবং এর জন্য কাজা ওয়াজিব হবে।
২. নির্বাচিত সেক্সুয়াল কার্যকলাপ
রোজা অবস্থায় কোনো ধরনের যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা রোজা ভেঙে দেয়। এই ধরনের কার্যকলাপ রোজার মাসে নিষিদ্ধ এবং কাজা ওয়াজিব করে।
৩. জবরদস্তি বা ভুলে খাবার গ্রহণ
যদি কেউ ভুলে খেয়ে ফেলে, তবে তার রোজা ভাঙবে না যতক্ষণ সে তা জানে না। তবে, যদি সে জানার পর খাবার গ্রহণ করে, তখন তার রোজা ভেঙে যাবে এবং তাকে কাজা রাখতে হবে।
৪. মাদক বা ধূমপান
ধূমপান বা মাদক গ্রহণ রোজার জন্য নিষিদ্ধ। এই ধরনের কোনো মাদক গ্রহণ করাও রোজা ভেঙে দেয় এবং কাজা ওয়াজিব করে।
৫. বমন বা পায়খানা করার মাধ্যমে শরীরের কোনো ক্ষতি হওয়া
যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করে, তা রোজা ভেঙে ফেলে। এর পরে তাকে কাজা রাখতে হবে।
৬. অত্যধিক রক্তক্ষরণ (যেমন মাসিক বা ইস্তিহাদা)
মাসিক বা ইস্তিহাদার কারণে যদি রক্তক্ষরণ ঘটে, তবে রোজা ভেঙে যায় এবং এটি কাজা ওয়াজিব করবে।
৭. অবসাদজনিত শারীরিক অসুস্থতা বা চিকিৎসা
কিছু অসুস্থতা, যেমন জীবনের ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে এমন কোনো রোগ বা মাদক গ্রহণ করা (যেমন ইনজেকশন গ্রহণ) রোজা ভেঙে দিতে পারে। তবে যদি চিকিৎসক তা না করতে বলুন, তখন কাজা ওয়াজিব হবে।
রোজা ভাঙলে কাজা ওয়াজিব হয়ে থাকে, অর্থাৎ ভাঙা রোজার জন্য একটানা কাঠামো অনুযায়ী অতিরিক্ত রোজা পালন করতে হয়। তবে কোনো ব্যক্তির প্রতি বিশেষ পরিস্থিতি বা শারীরিক অসুস্থতা থাকলে ইসলামি আইন অনুযায়ী কাজা গ্রহণ করা হতে পারে।