২০২৪ সালের জুলাই মাসে শুরু হওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, যা পরবর্তীতে রূপ নেয় গণঅভ্যুত্থানে, তার ইতিহাস সংরক্ষণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ‘দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থান-২০২৪ এর অডিও-ভিজ্যুয়াল দলিল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ’ প্রকল্পটি প্রবর্তন করেছে, যার প্রস্তাবিত ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৭ কোটি টাকা।
প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হলো ২০২৪ সালের আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস ও দলিল সংগ্রহ করে ভবিষ্যতের জন্য তা সংরক্ষণ করা। ইতোমধ্যে, প্রকল্পটির প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে এবং বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য উল্লেখযোগ্য খাতে ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রচার ও বিজ্ঞাপন খাতে ২০ লাখ টাকা, বই ও জার্নাল কেনায় ১০ লাখ টাকা, অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ খাতে ১৫ লাখ টাকা, পেট্রোল-অয়েল ও লুব্রিকেন্ট খাতে ৫ লাখ টাকা এবং ভ্রমণ খাতে ৩০ লাখ টাকা রাখা হয়েছে। এছাড়া, কম্পিউটার ও অফিস সামগ্রীর জন্য ৫ লাখ টাকা এবং পরামর্শক ফি বাবদ ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
এছাড়াও, প্রকল্পটির আওতায় গণঅভ্যুত্থান-২০২৪ এর সমন্বয়ক, ছাত্রনেতা, আহত ছাত্র-জনতা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাৎকারভিত্তিক ৩০০টি ডকুমেন্টারি নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। বিশেষায়িত ফিল্ম মিউজিয়াম তৈরির খরচও এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
প্রকল্পের পরিচালক ইয়াকুব আলী জানান, ‘২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস সংগ্রহে নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে এবং এর জন্য সরকারি কোষাগার থেকে সম্পূর্ণ ব্যয় মেটানো হবে’। তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংগ্রহের মতোই ২০২৪ সালের আন্দোলনের দলিল সংগ্রহ করা হবে’।
এছাড়া, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের অডিও-ভিজ্যুয়াল দলিল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ প্রকল্পটি এখনও অসমাপ্ত রয়েছে। ২০২১ সালে শেখ হাসিনা সরকার এই প্রকল্পটি গ্রহণ করেছিল, কিন্তু তার মেয়াদ শেষ হয়নি এবং এখন তা অসমাপ্ত রেখেই বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।