২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় মোট তালাক হয়েছে ৬৫০টি। এর মধ্যে স্ত্রীর মাধ্যমে তালাকের ঘটনা ৪৫০টি আর স্বামীর মাধ্যমে ২০০টি। অন্যদিকে, পূর্ণ তালিকা প্রস্তুত শেষ না হলেও খসড়া হিসাবে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত প্রতি মাসে ৪০০ থেকে ৭০০টি করে তালাকের ঘটনা ঘটেছে। এখানেও তালাক প্রদানে এগিয়ে নারীরা।অন্যদিকে, গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় মোট তালাকের ঘটনা ঘটে পাঁচ হাজার ৫৯০টি। এর মধ্যে স্ত্রীর মাধ্যমে তালাক দেওয়ার ঘটনা তিন হাজার ৬১৯টি, স্বামী দিয়েছেন এক হাজার ৯৭১টি। চলতি বছরের (২০২৩ সাল) জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত এখানে মোট তালাকের ঘটনা ঘটেছে এক হাজার ৯৯৯টি।
ঢাকা দক্ষিণের মতো উত্তর সিটি কর্পোরেশনেও পুরুষের তুলনায় নারীদের পক্ষ থেকে তালাক দেওয়ার সংখ্যাটা বেশি।বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর গত জুন মাসে প্রকাশ করা জরিপের ফল অনুযায়ী, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে তালাকের সংখ্যা বেড়েছে। গত এক বছরে তালাকের হার বেড়েছে ১.৪ শতাংশ। যা আগে ছিল ০.৭ শতাংশ। এ সময় ঢাকায় গড়ে ৪০ মিনিটের ব্যবধানে একটি করে তালাকের ঘটনা ঘটেছে।
আমাদের পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে উদ্যোগ নিতে হবে। ধর্মীয় অনুশাসন ও বাঙালি সংস্কৃতির পাশাপাশি পারিবারিক বন্ধনের প্রতি আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বন্ধুত্ব যে ক্ষণস্থায়ী, এ মাধ্যম সংসারে অশান্তি ডেকে আনতে পারে— এ বিষয়ে সবাইকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে
বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমাদের দেশে বিবাহ বিচ্ছেদ এখনও ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অনুসরণ করে হয়। আইন অনুযায়ী, এলাকা বিবেচনায় ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের কার্যালয়ে তালাকের আবেদন পাঠাতে হয়। বসবাসের ঠিকানা থেকে আবেদনটি সিটি কর্পোরেশনের আঞ্চলিক কার্যালয়ে আসে। এরপর মেয়রের কার্যালয় আবেদন নথিভুক্ত করে। বিচ্ছেদের আবেদন জমা পড়লে কর্তৃপক্ষ আবেদনকারী ও বিবাদী উভয় পক্ষকে আপস নোটিশ পাঠায়। সিটি কর্পোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তারা এ দায়িত্ব পালন করেন। দুই পক্ষের সমঝোতা না হলে কর্তৃপক্ষ আর কোনো দায়িত্ব নেয় না। আবেদনের ৯০ দিনের মধ্যে কোনো পক্ষ আপস না করলে কিংবা আবেদন তুলে না নিলে আইনগতভাবে তালাক কার্যকর হয়ে যায়।