মানিকগঞ্জে বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতার কারণে এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। কম খরচে লাভ বেশি হলেও গত বছরের চেয়ে এ বছর ৮ হাজার ২৪৮ হেক্টর কম জমিতে সরিষা চাষ করতে পেরেছেন কৃষকেরা।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গত বছর জেলার ৭ উপজেলায় ৭১ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছিল। এ বছর জেলায় আবাদ করা হয়েছে ৬৩ হাজার ২ হেক্টর জমিতে। অসময়ে বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে এ বছর সঠিক সময়ে সরিষার বীজ বপন করতে না পারায় কৃষকেরা ভুট্টা চাষের দিকে ঝুঁকেছেন।
হরিরামপুর উপজেলার সাপাইর এলাকার কৃষক সুমন শীল বলেন, ‘এ বছর অসময়ে বৃষ্টি হওয়ার কারণে আমাদের চক ভাতছালা বিলে পানি নামতে দেরি হয়েছে। এ জন্য আমরা এ বছর সরিষা চাষ করতে পারি নাই। হরিরামপুরে সবচেয়ে বেশি সরিষা আমাদের এই চকে হয়। এই সময় আমাদের এই চক হলুদ নদীর মতো দেখা যায়। এ বছর এখনো আমাদের চকে কাজ করতে হচ্ছে।’
নালী ইউনিয়নের কৃষক রবিউল বলেন, ‘এ বছর ৭ বিঘা জমিতে সরিষা বুনেছি। ঘরে উঠানো পর্যন্ত প্রতি বিঘায় খরচ হবে ১০-১২ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলে বিঘায় ৬ মণ সরিষা পাবো। আশা করি লাভ হবে। মানুষের মুখে শুধু শুনি কৃষি অফিসের লোকজন এসে কৃষককে সাহায্য করে। আমরা এলাকার সবচেয়ে বড় কৃষক পরিবার। আমাদের কাছে কোনো দিনও কৃষি অফিসের লোকজন আসেন না।’
উভাজানী গ্রামের কৃষক রতন বলেন, ‘আমাদের জমি উঁচু হওয়ার কারণে সঠিক সময়ে সরিষা চাষ করতে পেরেছি। যাদের জমি নিচু, বৃষ্টির কারণে এ বছর তারা সরিষা চাষ করতে পারে নাই। তারা বেশিরভাগ ভুট্টা, কালোজিরা ও সজ মসলা চাষ করেছেন।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. রবীআহ নূর আহমেদ বলেন, ‘অসময়ে বৃষ্টি হওয়ায় সরিষা বপন করার সময় মাটিতে জো ছিল না। এ জন্য এ বছর সরিষা চাষ কম হয়েছে। তবে জেলায় ভুট্টা ও পেঁয়াজের চাষ বেড়েছে। মূলত যেসব জমিতে সরিষা চাষ করতে পারেননি; এসব জমিতে পানি নেমে যাওয়ার পর কৃষক ভুট্টা এবং পেঁয়াজ চাষ করেছেন।’