শুক্রবার এলেই রাজধানীর বাজারগুলোতে মাছ-মাংসের দাম রাতারাতি বেড়ে যায়। যেখানে বৃহস্পতিবার রাতেও ব্রয়লার মুরগির মাংস ১৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল, সেখানে শুক্রবার সকালেই সেটি ২২০ টাকায় পৌঁছে যায়। এমন প্রবণতা শুধু ব্রয়লার মুরগি নয়, মাছ, দেশি মুরগি, এমনকি গরু ও খাসির মাংসের ক্ষেত্রেও দেখা যায়।
কেন বাড়ে শুক্রবারের বাজারে দাম?
বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মানুষের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এই মূল্যবৃদ্ধি ঘটে। চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ীরা এই দিনেই পরিবারের সাপ্তাহিক বাজার সেরে ফেলতে চান। এই সুযোগে বাজার সিন্ডিকেট প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়।
দামের বাস্তব চিত্র
বৃহস্পতিবার রাতের তুলনায় শুক্রবার সকালে মাছ-মাংসের দাম ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে যায়।
- ব্রয়লার মুরগি: ১৯৫-২০০ টাকা থেকে বেড়ে ২২০ টাকা।
- দেশি মুরগি: ৬০০ টাকা থেকে বেড়ে ৬৫০-৭০০ টাকা।
- রুই মাছ: ৩০০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৩০-৩৫০ টাকা।
- গরুর মাংস: ৭৫০-৭৮০ টাকা।
- খাসির মাংস: ১০৫০-১২০০ টাকা।
- বিভিন্ন মাছ: টেংরা ৫৫০, চিংড়ি ৫৫০-৮০০, শোল ৬০০, বোয়াল ৬০০, শিং ৩৫০-৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতাদের প্রতিক্রিয়া
বাজারে এমন অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
শরিফুল হাসান নামের এক ক্রেতা বলেন, “মুরগির দাম কমতে দেখলেও শুক্রবারে আবার বেড়ে যায়। সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ।”
আরেক ক্রেতা আনিসুল হক বলেন, “বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ না হলে সাধারণ মানুষ এভাবেই ঠকতে থাকবে।”
বিক্রেতাদের বক্তব্য
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, তারা বেশি দামে কিনে আনায় কম দামে বিক্রি করার সুযোগ নেই।
মুরগি ব্যবসায়ী মো. সুজন মিয়া বলেন, “পাইকারি বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। এতে বিক্রিও কমে যায়।”
মাছ বিক্রেতা মোহাম্মদ শওকত মিয়া বলেন, “প্রতি শুক্রবারই মাছের দাম ৪০-৫০ টাকা বাড়ে। তবে দাম এখনও নিয়ন্ত্রণে আছে।”
সরকারের ভূমিকা ও বাজারের ভবিষ্যৎ
বাজারে সরকারের নিয়ন্ত্রণের অভাবের কারণে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছে। ক্রেতারা মনে করছেন, নতুন সরকারের উচিত বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে এই পরিস্থিতির উন্নতি করা। অন্যথায়, সাধারণ মানুষকেই প্রতি শুক্রবার এমন বাড়তি দামে পণ্য কিনতে বাধ্য হতে হবে।
সরকারের প্রয়োজন বাজার মনিটরিং বাড়ানো এবং বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। পাশাপাশি পাইকারি পর্যায়ে মূল্য নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করলে খুচরা বাজারেও তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।