জাতীয় বীজ বোর্ড (এনএসবি)-এর ১৪৪তম সভায় বাংলাদশে ধান গবষেণা ইনস্টটিউিট (ব্রি) কর্তৃক উদ্ভাবিত আরও তিনটি ধানের জাত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নতুন জাতগুলোর মধ্যে একটি লবণাক্ততা সহনশীল, একটি উচ্চ ফলনশীল বোরো ও অন্যটি ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী।কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ব্রি এর মহাপরচিালক ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামানসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। নতুন উদ্ভাবিত এই তিনটি জাত-সহ এখন পর্যন্ত ব্রি সর্বমোট ১২১টি জাত উদ্ভাবন করেছে যার ৮টি হাইব্রিড।নতুন উদ্ভাবিত জাতগুলোর মধ্যে ব্রি ধান ১১২ লবণাক্ততা সহনশীল ও মাঝারি জীবনকালীন রোপা আমনের জাত। ব্রি ধান ১১২ লবণাক্ততার মাত্রাভেদে হেক্টর প্রতি ৪ দশমিক ১৪ টন থেকে ৬ দশমিক ১২ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম। এই জাতের ধানের চাল মাঝারি চিকন, সাদা এবং ভাত ঝরঝরে।ব্রি ধান ১১২ এর প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো চারা অবস্থায় ১২ ডেসি সিমেন্স প্রতি মিটার (৩ সপ্তাহ পর্যন্ত) লবণাক্ততা সহ্য করতে পারে। জাতটির জীবনকাল তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় উপকূলীয় লবণাক্ত অঞ্চলে ফসল কর্তনের পর মধ্যম উঁচু থেকে উঁচু জমিতে সূর্যমূখী ও লবণ সহনশীল সরিষা আবাদের সুযোগ তৈরি হবে।
ব্রি ধান ১১৩ জাতটি বোরো মওসুমের জনপ্রিয় জাত-২৯ এর বিকল্প হিসেবে ছাড়করণ করা হয়েছে। এটি মাঝারি চিকন দানার উচ্চ ফলনশীল জাত। এ জাতের ডিগ পাতা খাড়া, প্রশস্ত ও লম্বা এবং ধান পাকলেও সবুজ থকে। চালের আকার আকৃতি মাঝারি চিকন, এবং রং সাদা, দেখতে অনেকটা নাজিরশাইলের মতো। এ ধানের চালে এ্যামাইলোজের পরিমাণ শতকরা ২৮ ভাগ এবং ভাত ঝরঝরে। এছাড়া প্রোটিনের পরিমাণ শতকরা ৮ দশমিক ৪ ভাগ। প্রস্তাবিত জাতের ফলন পরীক্ষায় এ জাতটি ব্রি ধান-৮৮ এর চেয়ে ১১ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি ফলন দিয়েছে। এ জাতের গড় ফলন হেক্টরে ৮ দশমিক ১৫ টন। উপযুক্ত পরিবেশে সঠিক ব্যবস্থাপনা করলে এ জাতটি হেক্টরে ১০ দশমিক ১ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম। ব্রি ধান-১১৪ বোরো মওসুমের দীর্ঘ জীবনকালীন ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী জাত। এর গড় ফলন হেক্টর প্রতি ৭ দশমিক ৭৬ টন। তবে উপযুক্ত পরিচর্যায় এর ফলন হেক্টরে ১০ দশমিক ২৩ টন পর্যন্ত পাওয়া যায়। এ জাতের দানা মাঝারি মোটা এবং সোনালী বর্ণের। এ জাতের গড় জীবনকাল ১৪৯ দিন, যা বোরো মওসুমের জনপ্রিয় জাত ব্রি ধান-৮৯ এর সমান জীবনকাল। চালে এ্যামাইলোজের পরিমাণ শতকরা ২৭ ভাগ এবং প্রোটিনের পরিমণ শতকরা ৭ দশমিক ৭ ভাগ। এ জাতটিতে ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী প্রকট জিন Pi9 বিদ্যমান।