পত্রিকার পাতা
ঢাকাবৃহস্পতিবার , ২৬শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উদ্যোক্তা
  5. কর্পোরেট
  6. কৃষি ও প্রকৃতি
  7. ক্যাম্পাস-ক্যারিয়ার
  8. খেলাধুলা
  9. চাকরির খবর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. তারুণ্য
  13. ধর্ম
  14. পর্যটন
  15. প্রবাস
আজকের সর্বশেষ সব খবর

বৃষ্টিভেজা চালতা ফুল

Md Abu Bakar Siddique
জুন ২৬, ২০২৫ ৬:২৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

প্রতিদিন কলেজ শেষে টাউন হল মোড় পার হয়ে সার্কিট হাউস মাঠের পূর্ব দিকের আবুল মনসুর সড়ক ধরে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে যাই। তারপর গাছগাছালির নিচ দিয়ে কাচারিঘাট হয়ে হেঁটে হেঁটে বাসার দিকে যাই। গত ২০ জুন হেঁটে ব্রহ্মপুত্র তীরে যাওয়ার পথে রাস্তার বাম দিকে চালতাগাছে ফুল দেখতে পাই। গাছের ঘন পাতার আড়ালে চোখজুড়ানো সৌন্দর্য নিয়ে ফুটে আছে চালতা ফুল। ছবি তুলে ফেলি ঝটপট।

কবি জীবনানন্দ দাশ লিখেছিলেন-

 ‘আমি চলে যাব বলে

চালতা ফুল কি আর ভিজিবে না শিশিরের জলে
নরম গন্ধের ঢেউয়ে?’

কবি চলে গেছেন। তবে তার প্রিয় চালতা ফুল আছে এখনো। এই বৃষ্টির দিনে, নবীন বর্ষায় প্রকৃতির হাসি ফুটেছে এই ফুলের মুখে। এর পাতাও কম সুন্দর নয়। আয়তাকৃতি পাতার খাঁজ কাটা। পাতার শিরাবিন্যাস সমান্তরাল। সাদা পাঁচটি পাপড়ি। বেশ মোটা ও মাংসল। গোলাকৃতি ফুলের পরাগকেশর অসংখ্য। সব মিলিয়ে দৃষ্টিনন্দন।  

চালতাগাছের বৈজ্ঞানিক নাম Dillenia indica (ডিলেনিয়া ইন্ডিকা), এটি Dilleniaceae (ডিলেনিয়েসি) পরিবারের বৃক্ষ। এটি ইংরেজিতে  Elephant Apple নামে পরিচিত।

চালতাগাছ মাঝারি আকারের চিরহরিৎ বৃক্ষ-জাতীয় উদ্ভিদ। এ গাছ উচ্চতায় ১৫ মিটার পর্যন্ত হতে পারে। গাছটি দেখতে সুন্দর বলে শোভাবর্ধক তরু হিসেবেও কখনো কখনো উদ্যানে লাগানো হয়ে থাকে। গাছের গায়ে লালচে রঙের চকচকে বাকল থাকে। পাতার কিনারা খাঁজ কাটা। চালতার সাদা রঙের ফুল দেখতে সুন্দর, এটি সুগন্ধযুক্ত। ফুলের ব্যাস ১৫-১৮ সেন্টিমিটার। ফুলে পাঁচটি মোটা পাপড়িবেষ্টিত কেন্দ্রে প্রচুর হলুদ পুংকেশর থাকে। বৃতিগুলো সেসব পাপড়িকে আঁকড়ে ঘিরে রাখে। বছরের মে-জুন মাসে ফুল ফোটার মৌসুম। এটি বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, চীন, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি দেশে জন্মে।

বর্ষার পর ফল পাকে। শীতকাল পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। পাকা ফলের বীজ থেকে চারা তৈরি করা যায়। গাছে ফল পাকলে যদি তা না পাড়া হয়, তবে সে ফল থেকে বীজ আপনাআপনি মাটিতে ঝরে পড়ে; অনুকূল পরিবেশে তা থেকে চারা গজায়। এ জন্য চালতা তলায় প্রায়শ ছোট ছোট অনেক চারা দেখা যায়। এসব চারা তুলে বাগানে লাগিয়ে দিলেও গাছ হয়। তবে বীজ থেকে করা চারার গাছ ফল ধরতে ৬-৭ বছর লেগে যায়। গাছ বাঁচে কমবেশি ২৫-৩০ বছর। শাখা কলম বা কাটিং করেও চালতার চারা তৈরি করা যায়। সেসব কলমে দ্রুত ফল ধরে। এই ফল দিয়ে চাটনি ও আচার তৈরি হয়।

ঠাণ্ডা লেগে জ্বর হলে চালতার রস অনেক উপকারে লাগে। বাতের ব্যথাতে কচি চালতার রস জলের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। রক্ত আমাশয়ের জন্য চালতার কচি পাতার রস উপকারী। কফ ও সর্দির জন্য গাছের ছালের গুঁড়া নিরাময়ের কাজ করে। তা ছাড়াও মুখে ঘা কিংবা চামড়া উঠে গেলে এটি খেলে তাড়াতাড়ি সারে। এ ফলে রয়েছে ক্যালসিয়াম, শর্করা, বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, থায়ামিন, রিবোফ্লাবিন ও আমিষের মতো নানা ধরনের উপকারী উপাদান। 

 

চালতার আচার, চাটনি, টক ডাল অনেকেরই প্রিয় খাদ্য। পাকা ফল পিষে নিয়ে লবণ-মরিচ দিয়ে মাখালে তা বেশ লোভনীয় হয়। চালতা অপ্রকৃত ফল। আমরা এর রসালো, মাংসল বৃতিই খাই। ফল বাঁকানো নলের মতো।

লেখক: অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান
উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ, ময়মনসিংহ

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।