গর্ভধারণকালে বেশি আলু বা চিপস খেলে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক। গবেষকরা বলেন, খুব সম্ভবত আলুর মধ্যে থাকা শ্বেতসার রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে বলেই এমনটি হয়। বিএমজে পরিচালিত এ গবেষণায় গবেষকরা ২১ হাজারের বেশি গর্ভবতী নারীকে পর্যবেক্ষণ করেন। গর্ভধারণকালে বাড়তি খাবারের প্রয়োজন হয় এবং এ সময় অনেক নারী ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন। সাধারণত সন্তান জন্মদানের পর এই ডায়াবেটিস চলে যায়। কিন্তু ভবিষ্যতের জন্য এটা একটি সতর্কবার্তা।
১০ বছর পর্যন্ত গবেষকরা একদল নারীর তথ্য সংগ্রহ করেন। চার বছর পর পর তাদের প্রত্যেকে কি পরিমাণ আলু খেয়েছে এবং তারা গর্ভধারণকালে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছিলেন কিনা সেই তথ্য দিতে বলা হয়। ১০ বছর পর দেখা যায়, ২১,৬৯৩ জন নারী গর্ভবতী হয়েছেন এবং তাদের মধ্যে ৮৫৪ জন গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছেন। যদিও তাদের কেউই আগে থেকে ডায়বেটিসে আক্রান্ত ছিলেন না।
গবেষকরা ঝুঁকি বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বয়স, পরিবারের ডায়াবেটিসের ইতিহাস, খাদ্যাভাস, শারীরিক পরিশ্রম ও স্থূলতাকেও বিবেচনায় নেন।
গবেষকরা দেখেন, গর্ভকালীন সময়ে যেসব নারী সপ্তাহে দুই থেকে চারদিন ১০০ গ্রাম আলু (সেদ্ধ, ভর্তা, পোড়া বা চিপস আকারে) খেয়েছে তাদের ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আর সপ্তাহে পাঁচদিন আলু খেলে এই ঝুঁকি ৫০ শতাংশ বেড়ে যায়। অন্যদিকে, সপ্তাহে অন্তত দুইদিন আলুর পরিবর্তে সবজি বা আস্ত শস্যদানা খেলে ওই ঝুঁকি ৯ থেকে ১২ শতাংশ কমে যায়।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বেশিমাত্রায় আলু খেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। এজন্য আলুর বদলে মাঝে মাঝে অন্যান্য সবজি খাওয়া উচিত বলে মনে করেন গবেষকরা। যদিও যুক্তরাজ্যের গবেষকরা বলেন, বিএমজে পরিচালিত গবেষণায় যথেষ্ট প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। তাদের যুক্তি, ফাইবারের জন্য মানুষকে তাজা ফল ও সবিজ ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে শ্বেতসার জাতীয় খাবার খেতে হয়। যুক্তরাজ্যের পুষ্টি পরামর্শকরা বলেন, মানুষের দৈনিক খাবারের এক তৃতীয়াংশ আলু জাতীয় শ্বেতসার খাবার দিয়ে পূরণ করা উচিত। তবে কি পরিমাণ আলু খাওয়া উচিত সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মাত্রা নির্ধারণ করা নেই।