দেশের গণমাধ্যম খাতে কর্মরত সব সাংবাদিকের জন্য ঝুঁকি ভাতা, বিমা ও পেনশন চালুর সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে এই পরামর্শ দেওয়া হয়।
প্রতিবেদনে বিদ্যমান শ্রম আইনের ‘সংবাদপত্র শ্রমিক’ শব্দটি পরিবর্তন করে ‘গণমাধ্যম শ্রমিক বা কর্মী’ হিসেবে সংজ্ঞা সম্প্রসারণের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এর আওতায় অনলাইন, রেডিও, টেলিভিশনসহ সব ধরনের ব্রডকাস্ট ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে কর্মরত সাংবাদিক ও কর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে।
শ্রম সংস্কার কমিশনের মতে, ‘দ্য নিউজপেপার এমপ্লয়িজ (কন্ডিশন অব সার্ভিস) অ্যাক্ট, ১৯৭৪’-এর আদলে সাংবাদিকদের জন্য পৃথক আইন প্রণয়ন অথবা বিদ্যমান শ্রম আইনে একটি আলাদা অধ্যায় সংযোজন প্রয়োজন।
এছাড়া, ক্যামেরার পেছনে যাঁরা কাজ করেন—তাঁদের ‘চিত্র সাংবাদিক’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাবও প্রতিবেদনে রয়েছে।
সাংবাদিকদের চাকরির নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে কমিশন নিয়োগপত্র প্রদান বাধ্যতামূলক করা, সুনির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা ও ছুটির বিধান কার্যকর করা এবং নারী সাংবাদিকদের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটি নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে।
বেতন-বোনাস সময়মতো পরিশোধ নিশ্চিত করতে গণমাধ্যম মালিকদের প্রতি মাসের বেতনের নথি কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপের পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টকে কার্যকরভাবে সংস্কার করে তা যেন সাংবাদিকদের বাস্তব কল্যাণে ভূমিকা রাখতে পারে, সে দিকেও গুরুত্বারোপ করেছে কমিশন।
গণমাধ্যমে কাজ করা সাংবাদিকদের পেশাগত ঝুঁকি ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগকে সময়োপযোগী বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।