রমজান আসে সসংবাদ নিয়ে। পুরো বছরের সংযমের শিক্ষা দিয়ে বিদায়ও
নেয়। সবাই কমবেশি শিক্ষা নেয়, শুধু দেশের ব্যবসায়ীদের একটি অংশ ছাড়া। আর এসব ব্যবসায়ীর কারণেই ইফতারের অপরিহার্য খাদ্যপণ্যগুলো
যেন সাধারণ মানষের নাগালের বাইরে থাকে। দাম ধারাবাহিকভাবে বাড়তে বাড়তে এমন একটা অবস্থায় পৌছায়, এবারের রোজায় সাধারণ মানুশ ত্যাগ করতে হবে। রোজাদারদের একটু স্বস্তি দিতে কয়েকটি অত্যাবশ্যকীয় পণ্যে সরকার শুল্ক-ভ্যাটে ছাড় দিলেও বাজারে এর কোনো
প্রভাব পড়েনি; বরং এবার রোজার আগে থেকেই খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ানোর
প্রতিযোগিতা চলছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এবার শুধু রোজায় ইফতার সারতেই ব্যয় বেড়ে যাবে অন্তত ৪০ শতাংশ। সারা বিশ্বে রোজায় মুসল্লিরা খাবারের পেছনে একটু বেশিই ব্যয় করেন। গবেষণা বলছে, সারা বছরে মুসল্লিরা খাবারের পেছনে যে ব্যয় করেন, এর ১৫ শতাংশই যায় রোজার
মাসে। তবে বর্তমান মূল্যস্ফীতির ধাক্কায় এবার দেশে খাবারের দাম আরও বেশি বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যেই সব খাবারের
দাম বেড়েছে। রোজায় আনূষঙ্গিক অনেক পণ্যের দামই দুই বছরের ব্যবধানে ৫০ থেকে শতভাগ কিংবা তারও বেশি বেড়েছে। রোজায় ইফতার
সারতে চারজনের একটি পরিবারে প্রায় সাড়ে চার কেজি চিনি খরচ হতে
পারে। এতে ব্যয় হবে ৬৩০ টাকা। ভাজাপোড়ায় অন্তত পাচ লিটার তেল প্রয়োজন হয়, খরচ হবে নুন্যতম ৮০০ টাকা। এর বাইরে ছোলা, ডাল, বেসন, পেঁয়াজ, আলু, বেগুন, কাঁচা মরিচ, ধনেপাতাসহ ইফতারির
ভাজাপোড়ার অন্যান্য পণ্যে আরও প্রায় ৪ হাজার ৭০ টাকা ব্যয় হবে। ফল
কিনতে ব্যয় হবে প্রায় ৩ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে চারজনের একটি
পরিবারের ইফতার সারতে রমজান মাসে ন্যনতম খরচ হতে পারে প্রায় ৮ হাজার ৫০০ টাকা, যা গত বছর ছিল প্রায় ৬ হাজার টাকা। ব্যবসায়ীদের
শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড
ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহববুল আলমের ভাষায়, ‘অতি মূনাফাকারী’ যাতে এবার একট কম মূনাফা করেন। এফবিসিসিআই প্রতি বছর রমজানের আগে ব্যবসায়ীদের নিয়ে ‘লোকদেখানো’ মতবিনিময় সভায়
বসে। কিন্তু ব্যবসায়ীদের নিয়ে গণমাধ্যমের সামনে হম্বিতম্বিই সার, আদতে
বেলা শেষে ব্যবসায়ীরা অতি মূনাফার মৌসুম হিসেবেই দেখেন।