নরসিংদীর সদর উপজেলার কাঁঠালিয়া গ্রামের শাহীন মোল্লা মালয়েশিয়া থেকে ফিরে মাশরুম চাষ শুরু করেন। প্রথমে ব্যর্থ হলেও হাল ছাড়েননি তিনি। নিজের মায়ের নামে ‘অজূফা মাশরুম সেন্টার’ গড়ে তোলেন। এখান থেকে দেশ-বিদেশে মাশরুম সরবরাহ করছেন। তৈরি করেছেন অসংখ্য উদ্যোক্তা। নারী-পুরুষ মিলে কাজ করছেন ৩০ থেকে ৩৫ জন। আছে ঢাকায় শোরুমও। শাহীনের সাফল্য দেখে তরুণরা আগ্রহী হচ্ছেন। সরকারি সহায়তা পেলে আরও বড় পরিসরে কাজ করতে চান তিনি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সদর উপজেলার কাঁঠালিয়া ইউনিয়নের কাঁঠালিয়া গ্রামে ‘অজূফা মাশরুম সেন্টার’ নামে একটি মাশরুম খামার গড়ে তুলেছেন তিনি। এখান তৈরি হচ্ছেন অসংখ্য উদ্যোক্তা। তরুণ-তরুণীরা প্রতিদিন এখানে এসে মাশরুম চাষের পরামর্শ নিচ্ছেন।
ওমর ফারুক নামে এক তরুণ জানান, তিনি পেশায় গাড়িচালক ছিলেন। চলতি পথে উদ্যোক্তা শাহীন মোল্লার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তিনি বলেন, ‘শাহীন ভাইয়ের মাশরুম চাষ দেখে আমারও আগ্রহ জন্মায়।’ এর পর তিনি প্রাথমিকভাবে নিজ এলাকা নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে ৩ হাজার বীজের একটি মাশরুম প্রকল্প শুরু করেন। মাঝে মধ্যে কাঁঠালিয়া গ্রামে গিয়ে ‘অজূফা মাশরুম সেন্টার’ থেকে পরামর্শ নেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমার উৎপাদিত মাশরুম বিক্রিতে শাহীন ভাই সব সময় সহায়তা করেন।’
মাধবদী-খড়িয়া সড়কের পাশে, কাঁঠালিয়া গ্রামে অবস্থিত ‘অজূফা মাশরুম সেন্টারে’ বর্তমানে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ জন কর্মী চুক্তিভিত্তিক কাজ করছেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নারীকর্মীরা স্পন ও বীজ তৈরি এবং পরিচর্যায় ব্যস্ত থাকেন বলে জানান স্থানীয় শ্রমিকরা। শাহীনের সহকারী হিসেবে স্ত্রীকেও উন্নত প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। তিনি এখন শ্রমিকদের দিকনির্দেশনা দেওয়াসহ সার্বিক তদারকির পাশাপাশি বীজ রোপণের কাজ করছেন।
শাহীন বলেন, ‘প্রায় পাঁচ বছর আগে বিদেশ থেকে ফিরে মাশরুম চাষ শুরু করি। শুরুতে বিক্রি ও জনবল সংকটে অনেক হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। তবে এখন আমার উৎপাদিত মাশরুম দেশ-বিদেশে যাচ্ছে। আমি ইতোমধ্যে অর্ধশতাধিক মাশরুম চাষি তৈরি করেছি। আগ্রহীদের প্রশিক্ষণ ও বীজ সরবরাহ করে সহযোগিতা করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয় না।
বছরজুড়ে আমার সেন্টার থেকে মাশরুম বাজারজাত করছি। বাড়ির নিচতলায় অফিস রয়েছে, আর ঢাকায় রয়েছে শোরুম। আমি মাশরুম দিয়ে স্যুপ, আচারসহ নানা ধরনের অর্গানিক পণ্য তৈরি করে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করছি।’