পত্রিকার পাতা
ঢাকাশনিবার , ২১শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উদ্যোক্তা
  5. কর্পোরেট
  6. কৃষি ও প্রকৃতি
  7. ক্যাম্পাস-ক্যারিয়ার
  8. খেলাধুলা
  9. চাকরির খবর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. তারুণ্য
  13. ধর্ম
  14. পর্যটন
  15. প্রবাস
আজকের সর্বশেষ সব খবর

ইউটিউব দেখে কৃষিকাজ, বছরে আয় ১০ লাখ টাকা

Md Abu Bakar Siddique
জুন ১৫, ২০২৫ ৪:৩১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের তৈয়বুর রহমান লাজু (৪৮) নিজের জমিতে কচুরলতি ও সাথি ফসল চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তিন বছরে কৃষি থেকে বছরে আয় করছেন ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা। তার দেখাদেখি অনেকেই কৃষিকাজে আগ্রহী হচ্ছেন। যৌথ বাগান, গরুর খামার ও জৈবসার তৈরির হাউজ গড়েছেন। ইউটিউব দেখে শিখে কৃষিকাজে সফল হয়েছেন। কৃষি অফিসের সহায়তায় লাজু এখন এলাকার অনুপ্রেরণা। তিনি তার ফসল নিয়ে ডিজিটাল কনটেন্টও তৈরি করছেন।লাজুর বাবা আকবর আলী সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। বাবার অবসরের পর সংসারের হাল ধরেন লাজু। তিনি এইচএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। কৃষিকাজের প্রতি ভালোবাসা থেকে শুরু করেন চাষাবাদ। প্রথমে তিনি ৩০ শতাংশ জমিতে কচুরলতি চাষ করেন। রবিশস্যের তুলনায় এই ফসলে বেশি লাভ হয়েছে। তিনি জানান, ‘তিন বছর ধরে কৃষি নিয়ে গবেষণা করছি। ইউটিউব দেখে কচুরলতি চাষ শিখেছি। আমাদের এলাকায় কেউ এই ফসল করে না। তাই আমি চেষ্টা করেছি।’

প্রথমবার ৩০ শতাংশ জমিতে ৪৫ হাজার টাকা খরচ করে লতি চাষ করেন। ইতোমধ্যে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকার লতি বিক্রি করেছেন। আরও ২ থেকে ২ দশমিক ৫ লাখ টাকার লতি বিক্রির আশা করছেন। চাষ শেষে অবশিষ্ট গাছ এবং চারা বিক্রিও হবে। তিনি বলেন, ‘লতি চাষে রোগবালাই কম, খরচও কম। প্রতি সপ্তাহে ছয় থেকে সাত মণ লতি বাজারে নিয়ে যাই। পাইকারি বাজারে প্রতি মণ বিক্রি হয় ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়।’

প্রথমদিকে অনেকেই নিরুৎসাহিত করেছিলেন। কিন্তু তিনি থামেননি। এখন লাজুর দেখাদেখি অনেকেই লতি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। তার স্ত্রী তৌহিদা বেগম ও ছেলে তৌফিক এলাহী সব সময় পাশে থাকেন। উপজেলা কৃষি অফিস থেকেও নিয়মিত পরামর্শ পান তিনি। লাজুর খামারে এখন সাথি ফসলের যৌথ বাগান রয়েছে। ৭৭ শতক জমিতে ২৩০টি গৌরমতি আমগাছ ও ৬০০ পেয়ারা গাছ লাগিয়েছেন। কিছু আমগাছ বিদেশি উন্নত জাতের। ৭৫ শতক জমিতে ৩৬০টি বারি-৪ জাতের আমগাছের মাঝে ১ হাজার ২০০ বস্তায় আদা চাষ করছেন। এ মৌসুমে দেড় লাখ টাকার আম বিক্রির আশা করছেন।অন্যদিকে ২০ শতক জমিতে ৪৬টি শরিফা গাছের মাঝে ১৬১টি পেঁপে গাছ লাগিয়েছেন। এ ছাড়া ২০০টি বরই গাছ ও কলাগাছের বাগান করেছেন। পাশাপাশি একটি গরুর খামার গড়েছেন, যাতে ছয়টি গরু রয়েছে। গরুর গোবর থেকে ভার্মিকম্পোস্ট সার তৈরি করছেন।

বাগানের নিরাপত্তায় বসিয়েছেন সিসি ক্যামেরা। কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে এলাকার কৃষকদের নিয়ে গোষ্ঠীগত উদ্যোগ গড়ার চিন্তা করছেন। তিনি বলেন, ‘একই ধরনের ফসল একত্রে ঢাকায় পাঠালে সরাসরি ভালো দাম পাওয়া যাবে। এতে সবাই লাভবান হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যারা পড়াশোনা শেষে চাকরির পেছনে ছুটছে, তারা চাইলে উদ্যোক্তা হতে পারে। এতে পরনির্ভরশীল হতে হবে না, স্বাধীনভাবে কাজ করা যাবে।’

লাজুর উৎসাহে এলাকার অনেকে কৃষিকাজে এগিয়ে আসছেন। সাবেক ইউপি সদস্য নুরবানু জানান, ‘লাজু ভাইয়ের দেখাদেখি আমি ২০ শতক জমিতে মালটা, আমসহ পারিবারিক পুষ্টি বাগান করেছি। কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষণও নিয়েছি।’

এলাকার কৃষক আবুল কালামও একই কথা বলেন। তরুণ কৃষকদের নিয়ে ফেসবুকে একটি গ্রুপ গড়েছেন লাজু। সেখানে সবাই কৃষি বিষয়ে তথ্য শেয়ার করেন। ডিজিটাল মাধ্যমেও সফল লাজু। ফসল ফলানোসহ খামারের নানা কাজের ভিডিও বানিয়ে ফেসবুকে দেন। সেখান থেকেও আয় হচ্ছে।

ফুলবাড়ী উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহানুর রহমান বলেন, ‘তৈয়বুর রহমান লাজু একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। তার প্রজেক্ট পরিদর্শন করেছি। সাথি ফসল ও যৌথ বাগান লাভজনক এবং জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তাকে সব ধরনের কারিগরি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।’

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।