মিথ্যা বলা ও মিথ্যাবাদীর স্থান ইসলামে নেই। ইসলাম হলো সত্য ধর্ম। এখানে কেবলই সত্যবাদীর ¯’ান। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘যে বিষয়ে তোমার ভালোভাবে জানা নেই তা নিয়ে পড়ে থেক না। নিশ্চয়ই কান, চোখ ও হৃদয়- এসবের ব্যাপারে কেয়ামতের দিন প্রশ্নের মুখোমখি হবে’ (সরা বনি ইসরাইল-৩৬)।
জেনেশুনে তো বটেই এমনকি অনমাননির্ভর মিথ্যা সম্পর্কেও কোরআন সস্পষ্ট বলে দিয়েছে, ‘অনমাননির্ভর মিথ্যাচারীরা ধ্বংস হোক’ (সরা জারিয়াত-১০)। অন্য আয়াত থেকে জানা যায়, মমিথ্যাবাদীকে স্বয়ং আল্লাহ অভিশাপ দিয়ে থাকেন। মবাহালা সংμান্ত আয়াতে এসেছে, তাহলে আমরা সবাই আল্লাহর কাছে এ দোয়া করি যে, মিথ্যাবাদীদের ওপর আল্লাহর অভিশাপ অঝোর ধারায় বর্ষিত হোক’ (সরা আলে ইমরান
৬১)।
আল্লাহতায়ালা মিথ্যাবাদীকে ঘণা করেন
এবং কেয়ামতের দিন মিথ্যাবাদী থেকে মখ
ফিরিয়ে নেবেন। আল্লাহ কোরআনে হুশিয়ার করে
বলেন, ‘সতরাং পরিণামে তিনি তাদের অন্তরে
নিফাক (দ্বিমখিতা) রেখে দিলেন সেদিন পর্যন্ত,
যেদিন তারা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, তারা
আল্লাহকে যে ওয়াদা দিয়েছে তা ভঙ্গ করার
কারণে এবং তারা যে মিথ্যা বলেছিল তার কারণে’
(সরা তওবা-৭৭)। অন্য আয়াত থেকে জানা
যায়, মিথ্যা বলা মনাফিকি বৈশিষ্ট্য। পবিত্র
কোরআনে আল্লাহ মিথ্যা বলার শাস্তির কথা
উল্লেখ করে বলেছেন, ‘তাদের হৃদয়ে আছে
একটি অসখ, আল্লাহ সে অসখ আরও বাড়িয়ে
দিয়েছেন। আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক
শাস্তি; কারণ তারা ছিল মিথ্যাবাদী’ (সরা বাকারা
১০)। মিথ্যা সব পাপের মা বলা হয়। একটি
ছোট্ট মিথ্যা থেকে শত শত পাপের জন্ম হয়। তাই
খব সাধারণ বিষয়েও মিথ্যা বলা নিষেধ। কেননা
মিথ্যাকে হালকা মনে করার ফলে মানষ ধীরে
ধীরে মিথ্যায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। তখন মিথ্যা কথা
বলতে তার আর দ্বিধা করে না। যে কোনো বিষয়ে
মখ দিয়ে অকপটে মিথ্যা বের হয়ে আসে।
জলিলে কদর সাহাবি ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে
বর্ণিত, রসল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা সত্যকে
আকড়ে ধর। কারণ সত্য পণ্যের পথ দেখায় আর
পণ্য জান্নাতের পথ দেখায়। কোনো ব্যক্তি সব
সময় সত্য কথা বললে এবং সত্যের অনসন্ধানী
হলে সে শেষ পর্যন্ত আল্লাহর কাছে সত্যবাদী
হিসেবে লিখিত হয়। আর তোমরা মিথ্যা থেকে
সম্পর্ণরপে দরে থাক। কারণ মিথ্যা পাপের রাস্তা
দেখায় আর পাপ জাহান্নামের রাস্তায় নিয়ে যায়।
কোনো ব্যক্তি সব সময় মিথ্যা কথা বললে এবং
মিথ্যার অনসন্ধানী হলে সে শেষ পর্যন্ত আল্লাহর
কাছে মিথ্যাবাদীরূপে পরিগণিত হয়’ (মসলিম)।
আমরা কথায় কথায় খব সাধারণ বিষয়ে
অন্য আয়াত থেকে
জানা যায়,
মিথ্যাবাদীকে স্বয়ং
আল্লাহ অভিশাপ দিয়ে
থাকেন।
‘তাদের হৃদয়ে আছে
একটি অসুখ, আলাহ
সে অসুখ আরও
বাড়িয়ে দিয়েছেন।
অবলীলায় মিথ্যা কথা বলে ফেলি। অতি সাধারণ
বিষয়েও মিথ্যা বলা এমনকি বিনোদনের জন্যও
মিথ্যা বলাও ইসলামে নিষেধ। হিজাম (রা.)
থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন,
‘অকল্যাণ হোক ওই ব্যক্তির, যে মানষকে
হাসানোর জন্য মিথ্যা কথা বলে। অকল্যাণ হোক
ওই ব্যক্তির, অকল্যাণ হোক ওই ব্যক্তির’
(তিরমিজি)। অন্য হাদিসে স্বপ্ন নিয়ে মিথ্যা বলা
সম্পর্কেও সতর্ক করা হয়েছে। ইবনে আব্বাস
(রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম
(সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো স্বপ্ন
দেখেছে বলে দাবি করল, অথচ সে তা দেখেনি,
তাহলে তাকে দটি জবের দানা একত্রে জোড়া
দিতে বাধ্য করা হবে অথচ সে তা কখনোই
করতে পারবে না’ (বখারি ও তিরমিজি)।